সাইকোমেট্রিক টেস্ট বাংলাদেশে এখনো সেই অর্থে প্রচলিত নয়, তবে পরের দশকে গ্রহণযোগ্যতা পাবে এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। কারণ পশ্চিমের অনেক দেশের কোম্পানীতেই রিক্রুটমেন্টের সময় সাইকোমেট্রিক টেস্ট বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশেও প্রতিষ্ঠিত কিছু মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে সাইকোমেট্রিকের প্রচলন শুরু হয়েছে।

আগের প্রজন্মের যারা ব্যবসা করতেন বা কোম্পানী চালাতেন, ব্যক্তিমালিকানাধীন সেইসব কোম্পানীর বেশিরভাগ মালিকই চিন্তার দিক থেকে সামন্তীয় ঘরানার, তাদের বয়স আরো বেড়েছে, বিজনেসের ধরন বদলেছে এবং আশার কথা হলো সেখানে ২য় প্রজন্মের অভিষেক ঘটছে। ফলে ২০২০ এর দশকে আগামী ৫ বছরের মধ্যেই যে চাকরির নিয়োগে সাইকোমেট্রিক টেস্ট অপরিহার্য হয়ে উঠবে তা এখনই অনুমান করা যায়। ইন্টারেস্টিংলি,হিউম্যানল্যাব থেকে আমরা একটি নতুন ব্রান্ড নিয়ে এসেছি যার নামও itsonuman ( একে অবশ্য its on u man এভাবেও পড়া যায়!)

অনলাইনে যারা সাইকোমেট্রিক টেস্টগুলো দেয় তারা মূলত ব্যক্তিগত আগ্রহ আর কৌতূহল থেকেই দেয়। তারা নিজেরাও জানে এই টেস্টগুলো শতভাগ নির্ভুল নয় ( সেটার প্রয়োজনও নেই), এই টেস্টগুলো মূলত বিভিন্ন ধরনের ডেটা এনালাইসিস করে একজন ব্যক্তির মৌলিক কিছু প্রবণতা সম্পর্কে সামান্য ধারণা দেয়ার চেষ্টা করে মাত্র। প্রতিটি মানুষই একেকটি সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্ব; কয়েকটি মাত্র প্রবণতা যেগুলোর সবকয়টি প্রবণতা তার মধ্যে নাও থাকতে পারে, সেটা দিয়ে একজন ব্যক্তিকে সীমাবদ্ধ করা যায় না কখনো।

যারা সাইকোমেট্রিক ব্যবহার করে এই সীমাবদ্ধতা মেনেই ব্যবহার করে। কারণ মানুষটিকে স্ক্যান করা টেস্টের উদ্দেশ্য থাকে না, বরং তার ব্যক্তিত্বের হাইলাইটস দেখানোই মূখ্য। সাইকোমেট্রিক না সাইন্স, না আর্টস; এটাকে বলা যায় deduction based গাণিতিক বিশ্লেষণ।

সাইকোমেট্রিক সংক্রান্ত আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। আমি যখন অফলাইনে সাইকোমেট্রিক টেস্ট নিয়ে দেশীয় বিভিন্ন ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানীর মালিকদের সাথে কথা বলতে যাই বেশিরভাগই আমাকে টাউট এবং ধান্ধাবাজ গণ্য করে এড়িয়ে যায় বা কথা বলবার প্রয়োজন মনে করে না। যারা কথা বলবার সৌজন্যটুকু দেখায় তাদের বেশিরভাগের কাছেই সাইকোমেট্রি মানে হাত দেখা বা গণকঠাকুর জাতীয় কাজ।

আর ব্যক্তিপর্যায়ে যাদের সাথে আলোচনা করেছি অনেকেই বলেছে সাইকোমেট্রি এক ধরনের ছদ্মবিজ্ঞান, এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই, সুতরাং এটা নিয়ে আগ্রহ দেখানো নিরর্থক। তাহলে রিক্রুটমেন্টে এই টেস্ট ব্যবহার করে কেন জিজ্ঞেস করলে বলে এর চাইতে ইফেক্টিভ টুলস হয়তো নেই আপাতত। ডেটা এনালাইসিস করে মানুষের প্রবণতা সম্বন্ধে প্রেডিক্ট করা সম্ভব কিনা এই প্রশ্ন করলে অবশ্য তারা বলে machine learning দিয়ে তো অবশ্যই সম্ভব, কিন্তু সাইকোমেট্রিক এ অত ডিপ লেভেলের টেকনোলজি নিশ্চিতভাবেই ব্যবহার করা হয় না, এখানে বড়োজোর কিছু স্ট্যাটিসটিকাল প্যারামিটার সেট করা থাকে। পাল্টা যদি বলি, স্ট্যাটিসটিক্স কি একটা হাইলাইটস দেখানোর সামর্থ্য রাখে না? তখন বহু কষ্টে নিতান্ত অনিচ্ছায় তারা ‘হ্যাঁ’ বলতে বাধ্য হয়।

তাই সাইকোমেট্রিক টেস্ট ব্যবহারের পূর্বে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে আপনি এর থেকে আদতে কী প্রত্যাশা করেন।

সম্পূর্ণ বাংলাদেশের কালচার এবং কনটেক্সটকে মাথায় রেখে নিজস্বতা দেখিয়ে, অর্থাৎ জনপ্রিয় সাইকোমেট্রিকগুলোকে সামান্যতম অনুসরণ বা অনুকরণ না করে বাংলা ভাষায় কেউ সাইকোমেট্রিক টেস্ট তৈরি করেছে কিনা জানা নেই আমার। যদি না করে থাকে তাহলে এক্ষেত্রে আমিই প্রথম, করে থাকলে সেই অভিযাত্রায় আমিও একজন সহযাত্রী।

আগামী দেড়-দুই বছরে হিউম্যানল্যাব৭৭৭ থেকে আমরা আরো বেশ কয়েকটা সাইকোমেট্রিক টেস্ট তৈরি করতে চাই। বিগত ২৪ বছরে সরাসরি ইন্টারভিউ করেছি প্রায় ৫০০০ মানুষের, পর্যবেক্ষণ আর পর্যালোচনা করা হয়েছে আরো প্রায় ৩৫০০-৪০০০ মানুষ, প্রায় ৯০০০ মানুষের বিশাল ডেটা মাথায় নিয়ে ঘুরছি। সময় হয়েছে সেই ডেটার আলোকে কিছু প্যাটার্ন তৈরি করার।

এখনো পর্যন্ত ৩টি সাইকোমেট্রিক টেস্ট তৈরি করা হয়েছে।
১. ক্যারিয়ার ওরিয়েন্টেশন: একজন মানুষ কীভাবে কাজ করে এবং চিন্তা করে সে সংক্রান্ত ১৮টি প্যারামিটার পর্যালোচনা করে কোন ধরনের ক্যারিয়ার তার জন্য ন্যাচারাল সে সংক্রান্ত এনালাইসিস দেয়ার চেষ্টা করা হয়। প্রশ্ন থাকে ৬৭ টি, পর্ব ৬টি। গড়ে সময় লাগে ২৫ মিনিট থেকে শুরু করে ৫০ মিনিট পর্যন্ত। তবে কারো ব্রেইনের ফাংশনালিটির উপর নির্ভর করে সময় কম-বেশি হতে পারে। এটা ব্যক্তি পর্যায়ের প্রোডাক্ট। টেস্টের মূল্য ৩৭৯ টাকা। এখনো পর্যন্ত কিনেছেন ৩৫ জন!

২. ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা:একজন ব্যক্তির ১৮টি পারসপেক্টিভ বিশ্লেষণ করে তার ব্যক্তিগত জীবন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাজে ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা কেমন হতে পারে সে সংক্রান্ত টেস্ট। এটি ব্যক্তি পর্যায় এবং কোম্পানী দুই ধরনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। প্রশ্ন সংখ্যা ৮৯, পর্ব সংখ্যা ৪, টেস্ট দিতে সময় লাগে গড়ে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট, তবে ব্রেইনের ফাংশনালিটির উপর নির্ভর করে সময় কম-বেশি হতেই পারে। টেস্টের মূল্য জনপ্রতি ৪১৯ টাকা

৩. জব ফিটনেস ইন্ডিকেটর: এটা মূলত কোম্পানী পর্যায়ে রিক্রুটমেন্টের জন্য তৈরি করা হয়েছে। একজন কর্মী কীভাবে চিন্তা করে, তার ন্যাচারাল পারফরম্যান্স প্রবণতা কেমন, এবং কীভাবে নারচার করলে তার ট্যালেন্টের বেস্ট ইউটিলাইজ করা সম্ভব সেসব প্রেডিকশন দেয়া হয়। একটি সফটওয়্যার কোম্পানীর রিক্রুটমেন্টে ইতোমধ্যে টেস্টটি ব্যবহারও করা হয়েছে। টেস্ট দিতে সময় লাগে গড়ে ২৫ থেকে ৪৫ মিনিট। একজন মানুষের ২৭টি পারসপেক্টিভ পর্যালোচনা করে এটি তৈরি করা হয়েছে। টেস্টের মূল্য জনপ্রতি ৪৭৯ টাকা

বর্তমানে আরো ৩টি টেস্ট নিয়ে রিসার্চ চলছে
১. 10 personalities type indicator: মানুষকে ইন্ট্রোভার্ট-এক্সট্রোভার্ট, থিংকিং-ফিলিং প্রভৃতি প্যারামিটারের ভিত্তিতে যে পারসোনালিটি বিভাজন করা হয় তার সাথে আমি একমত নই। আমি বিশ্বাস করি প্রতিটি মানুষের নিউক্লিয়াস থাকে। সেই নিউক্লিয়াস আসলে ১০ রকম- আধ্যাত্মিক, কর্তৃত্বকামী, কর্মকামী, সহমর্মি, বৈষয়িক, চেঞ্জমেকার, শিল্পকামী, সৃজনকামী, প্রতিক্রিয়াশীল এবং ইন্দ্রিয়িপরায়ণ। কার নিউক্লিয়াস কীরকম তার ভিত্তিতেই তার পারসোনালিটি নির্ধারিত হয়। ইন্ট্রোভার্ট পরিস্থিতির কারণে এক্সট্রোভার্ট হয়ে যায়, যে যুক্তিবাদী সেও এমপ্যাথি ড্রাইভেন হতে পারে, কিন্তু যার নিউক্লিয়াস কর্তৃত্বকামী সে আজীবনই সেরকমই থাকবে, হয়তোবা পরিস্থিতির কারণে প্রকাশিত হবে না সবসময়। আশা করছি জানুয়ারির শেষ দিকে টেস্টটা উন্মুক্ত করতে পারবো।

২. ৮ থেকে ১৬ বছর বয়সী বাচ্চা বা কিশীরদের ন্যাচারাল টেন্ডেন্সি পর্যালোচনা করে কোন ধরনের একাডেমিক পড়াশোনা তার জন্য উপযুক্ত হবে সে সম্পর্কে প্রেডিক্ট করা। যার পড়া উচিত ইকোনমিক্সে সে পড়াশোনা করছে মেডিকেলে, আবার যে পড়তে পারতো ফিলোসফিতে সে হয়ে গেছে ইঞ্জিনিয়ার। বাংলাদেশের পড়াশোনা মূলত চাকরির বাজারকে টার্গেট রেখে পরিচালিত হয়। সেক্ষেত্রে যার নৃতত্ত্ব বা দর্শনে পড়ার উপযুক্ততা আছে তার উচিত বাংলাদেশের কোনো ভার্সিটি বাদ দিয়ে বিদেশী ভার্সিটিতে চেষ্টা করা। এতে তার জীবনভর নিজের সাথে ফাইট করতে হবে না। নিজের সাথে দ্বান্দ্বিকতায় প্রতিনিয়ত কত মানুষ মানসিকভাবে নিহত হয় সেই পরিসংখ্যানের ইয়ত্তা আছে কি?

৩. সেলসম্যানশিপ দক্ষতা। মানুষের টিকে থাকার জন্য সেলসম্যানশিপের প্রয়োজন পড়ে সর্বাগ্রে। সেই দক্ষতায় যার ঘাটতি রয়েছে তার জীবন কাটে নিদারুণ দুর্বিষহতায়। তাই এরকম একটি টেস্ট তৈরির প্রয়োজন বোধ করেছি।।

এবার আসা যাক ক্যারিয়ার ওরিয়েন্টেশন টেস্ট প্রসঙ্গে। টেস্টের ফলাফল অংশে শেষের দিকে একটি পাই-চার্ট থাকে যেখানে 7D এর উল্লেখ করে বিভিন্ন D এর পারসেন্টেজ দেয়া থাকে।

টেস্ট দেয়া মানুষদের অনেকেই এই D গুলোর ব্যাখ্যা চেয়েছেন। মূলত সেই প্রশ্নের উত্তর দিতেই বাকি অংশের অবতারণা।

মানুষের আউটপুট নির্ভর করে সে কীভাবে তার স্ট্রেন্থকে ম্যাক্সিমাইজ করে সেই দক্ষতার উপর। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ চিন্তা করে উল্টো পদ্ধতিতে, তারা স্ট্রেন্থ নিয়ে সচেতন হওয়ার পরিবর্তে উইকনেস বা লিমিটেশন নিয়ে বেশি চিন্তিত থাকে। যে কারণে স্ট্রেন্থ ম্যাক্সিমাইজ হয় না, লিমিটেশনও ভালোমতো দূর হয় না; সে চিরকালীন মিডিওক্রিটি লুপে ঢুকে পড়ে।

যেমন ধরা যাক, নাহিদের স্ট্রেন্থ সে ধৈর্যশীল। প্রশ্ন হওয়া উচিত, পৃথিবীতে যত ধৈর্যশীল মানুষ আছে তাদের নিয়ে সেরা একাদশ গঠন করলে সেখানে কি নাহিদ স্থান পাবে?

মানুষের জীবনের সবচাইতে দামি এবং অভিন্ন মুদ্রার নাম সময়। নাহিদের চাইতে প্রতিবাবান, আর্থিকভাবে স্বচ্ছল, এবং সামাজিকভাবে প্রভাবশালী মানুষ পৃথিবীতে অজস্র আছে। কিন্তু বরাদ্দকৃত সময়ের পরিমাণ প্রশ্নে প্রত্যকে একই মুদ্রা বহন করে। নাহিদের জন্য ২৪ ঘন্টা, ডেনমার্কের প্রেসিডেন্টের জন্য ৩১ ঘন্টা এমন হবার কোনোই সুযোগ নেই।

ধরা যাক, মোবারক আর নাহিদ দুজনই নিজেদের বদলানোর জন্য দৈনিক ১০ ঘণ্টা চেষ্টা করে। মোবারক ১০ ঘন্টাই কেবলমাত্র তার স্ট্রেন্থ ম্যাক্সিমাইজের পেছনে খরচ করে, কিন্তু নাহিদ ৮ ঘণ্টা স্ট্রেন্থের পেছনে ২ ঘন্টা লিমিটেশন খাতে খরচ করে।

৬ মাস বা ১ বছর পরে কার আউটপুট বেশি হবে?

একথা বলার মানে এই নয়, লিমিটেশনের ব্যাপারে নির্বিকারত্ব দেখাতে হবে। ধরা যাক মোবারক চায় কমিউনিকেশনে পৃথিবীর দক্ষতমদের অন্যতম হবে। সেই লক্ষ্যে চেষ্টা করতে গিয়ে সে আবিষ্কার করবে কিছু লিমিটেশনের কারণে স্ট্রেন্থ ম্যাক্সিমাইজ করা যাচ্ছে না, সে তখন লিমিটেশনের দিকে মনোযোগ দিবে স্ট্রেন্থ ম্যাক্সিমাইজ প্রকল্পের অংশ হিসেবে। এর সাথে নাহিদের লিমিটেশন কাটানো প্রকল্পের আসমান-জরিপ ফারাক।

আমার এনালাইসিস বলে মানুষের আউটপুট লেভেল নির্ভর করে সে তার এনার্জি ডিস্ট্রিবিউশন ৭টি প্যারামিটারের মধ্যে কীভাবে পরিচালিত করে। বণ্টন সুষম হলে সেও সুষম বা গড় মানুষ হয়, বণ্টনে এক্সট্রিমিটি থাকলে তার পক্ষে আউটপুট নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। এমনিতে একেক প্রবণতার জন্য এনার্জি ডিস্ট্রিবিউশনের একটি কমন টেম্পলেট থাকে৷ মানুষের ব্যক্তিগত ইচ্ছা বা চেষ্টার পার্থক্যের কারণেই একই প্রবণতার মানুষ হয়েও এনার্জি ডিস্ট্রিবিউশনে পার্থক্য আনা সম্ভব হয়।

তো সেই 7D তে আদতে কী কী আছে?

1. Desire: একজন মানুষ নিজেকে নিয়ে কী প্রত্যাশা করে, বা তার উদ্দেশ্য, দার্শনিকতাগুলো লালনে তার প্রস্তুতি কী মূলত সেই বিগ পিকচার থেকেই সে তাড়িত এবং চালিত হয়।

2. Depth: বিগ পিকচার তৈরির পর নিজের মধ্যে কতটুকু রসদ আছে সেই এনালাইসিস করতে হয়। যদি রসদেরই ঘাটতি থাকে সেই পিকচারের পূর্ণাঙ্গ বা আংশিক স্পর্শ করাও তার জন্য দুরূহ হয়ে উঠে।

3. Determination: বলা যায় 7D এর সবচাতে প্রভাবশালী ফ্যাক্টর। আপনার পর্যাপ্ত রসদ আছে কিন্তু সেগুলো কাজে লাগানোর মনোবল বা পর্যাপ্ত সংকল্প নেই, তাহলে আউটপুট সমীকরণ গোঁজামিল দিয়ে মিলাতে হয়।

4. Dedication: এটা 7D এর বাকি ৬টি প্যারামিটারের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে। এখানে কমতি থাকলে সাধারণত রেন্ডম বা এলোমেলোতা তৈরি হয়

5. Desperateness: একে বলা যায় 7D এর এক্স ফ্যাক্টর। কারো মধ্যে এই প্যারামিটারের অনুপস্থিতি আউটপুটের ব্যাপারে তাকে ক্যাজুয়াল বানিয়ে দেয়। নাহিদ আর মোবারকের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিয়েছিল মূলত এই ডেসপারেটনেসই।

6. Direction: এটা মূলত কনসিসটেন্সির সাথে সম্পর্কযুক্ত। যার মন ঘনঘন বদলায় এবং দিক পরিবর্তিত হয় তার জন্য আউটপুটের এক্সিলেন্স বজায় রাখা কঠিন। একে বলা যেতে পারে 7D এর আর্কিটেক্ট।

7. Deliver: এটা চূড়ান্ত পরিণতি। আপনার সবকিছুই ঠিকঠাক, কিন্তু শেষ মুহূর্তে গিয়ে যদি পারফর্ম করতে না পারেন সেক্ষেত্রে আউটপুট কিছুটা বাধাগ্রস্ত হতে পারে, তবে সেটা এতোটাও নয় যে যার জন্য ভুগতে হতে পারে।

প্রতিটি প্যারামিটার নিয়ে বিস্তারিত নিবন্ধ লেখা দাবি করে৷ হয়তোবা সেটাও পূরণ হবে একদিন।

কাকতালীয়:
সম্প্রতি নেদারল্যান্ডের এক পেশাদার সাইকোলজিস্টের সাথে পরিচয় এবং আলাপ হয়েছে। তিনি আমাকে শুরুতেই appreciative inquiry নামের এক থিওরির গুগল লিংক ধরিয়ে দিলেন সে সংক্রান্ত আন্ডারস্ট্যান্ডিং ডেভেলপ করতে, কারণ বাংলাদেশের এক কোম্পানীতে ওয়ার্কশপ নিতে আসবার সম্ভাবনা রয়েছে তার।

গুগলে ঢুকেই অবাক হলাম appreciative inquiry এর সংজ্ঞা দেখে-Appreciative Inquiry is an approach to organisational change which focuses on strengths rather than on weaknesses – quite different to many approaches to evaluation which focus on deficits and problems.

তার মানে আমি নিজে নিজে যা চিন্তা করেছি তা ভুল বলা যাচ্ছে না।

যদিও প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কিত, তবুও প্রতিষ্ঠান তো আদতে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের মানুষেরই সমন্বয়।

অবাকের মাত্রা আরো বাড়ে উইকিতে এপ্রিসিয়েটিভ এনকুয়ারির মূল নীতি পড়তে গিয়ে। সেখানে পাই 4D মডেল, সেই 4D এর অধীনে আছে Discover, Dream, Design, Destiny or Deploy!

চিন্তা করে দেখলাম 4D এর তুলনায় 7D অনেক বেশি এলাবরেটিভ এবং চ্যালেঞ্জিং; ব্যাপারটা আনন্দদায়ক।

ক্যারিয়ার ওরিয়েন্টেশন টেস্টটি দিতে চাইলে ০১৫৫২৯২৬২০২ নম্বরে ৩৭৯ টাকা বিকাশ করে ইনবক্সে ট্রানজেকশন আইডি আর ইমেইল আইডি দিলে আপনি একটি ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড পেয়ে যাবেন।

আশা করছি, টেস্টটি আপনার চিন্তাপ্রক্রিয়ায় কাজে লাগবে।

হিউম্যানল্যাবকে উৎসাহিত করুন।