১. ভালোবাসাধর্মী ইমোশনের শূন্যতা আমার আজন্ম। তবু কিছু মানুষকে ভ্যালুয়েবল-মিনিংফুল-রিসোর্সফুল মনে করি। যাদের ভ্যালুয়েবল ভাবি তাদের জন্য ক্রেজিনেসের চূড়ান্ততা প্রদর্শন করে নিজের ভ্যালু খোয়াই৷
২. ভালোবাসতে না পারলেও কোনো মানুষকে ঘৃণা কখনো করতে পারিনি। মানুষের প্রতি আমার সহজাত রেসপন্স কৌতূহল৷ ‘কর্মস্পৃহাহীন, অভিযোগপ্রবণ’ এই দুই ধরনের মানুষের পেছনে সময় বা এনার্জি খরচ করি না। বাকি সব ধরনের মানুষের সাথেই গল্প উপভোগ্য।
৩. কোনোরকম গণমুখী সেলিব্রিটির প্রতিই ন্যূনতম আকর্ষণ বোধ করি না। আমার যাবতীয় মোহাচ্ছন্নতা কীর্তিমানের প্রতি৷ জগতে তারাই কীর্তিমান হয় যারা দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজের পছন্দের কাজটিতে নিমগ্ন থাকে।
৪. মানবপ্রজাতির প্রাণঘাতি দুটো জীবাণুর একটি ‘সামাজিক সফলতা’, অন্যটি ‘মতাদর্শের উগ্রতা’। দুইয়ের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হওয়ার সম্ভাবনা নাকচ হয়ে গেছে বহু বছর আগেই।
৫. প্রথম ১৫ বছরে আলাপ হওয়া ৯৭ শতাংশ মানুষকেই পরবর্তী জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় মনে করি না। এদের মধ্যে কয়েকজনকে পুনরাবিষ্কার করার মিশন জারি রয়েছে।
৬. পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, ধর্ম, মূল্যবোধ, প্রাতিষ্ঠানিকতা, সম্পর্ক, স্বীকৃতি, বন্ধুত্ব, স্ট্যাটাস—– প্রতিটিরই প্রচলিত ন্যারেটিভকে অগ্রাহ্য করি, তবে সেগুলোর নিজস্ব সংজ্ঞা এবং ন্যারেটিভ তৈরি করে নিয়েছি। সকল প্রকার পিছুটান জয় করা হয়ে গেছে৷
৭. ডিজএগ্রিমেন্ট না থাকলে কারো প্রতি মোহ ধরে রাখতে পারি না। অন্তত ১১ ঘন্টা ওয়ান টু ওয়ান (মুখোমুখি অথবা ভারচুয়ালি) আলাপ না হলে তারা আমার জগতে নিছকই ‘চ্যাটজিপিটি’, তাদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার সবটাই পারফরম্যান্স।
৮. যে কথা কারো সামনে বলতে পারি না তা পেছনেও বলি না৷ তবে নিজের জীবনে যেহেতু কোনোপ্রকার সিক্রেট নেই, গোপনীয়তার কনসেপ্ট বা আইডিওলজি অনুধাবনে অপারগতা স্বীকার করে নিই।
৯. তত্ত্ব বা তথ্য জানাকে তেমন মূল্যবান মনে করি না। তত্ত্ব বা তথ্যের প্রসেসিং থেকে ব্যক্তির উপলব্ধির ভিত্তিতেই কারো প্রতি আকৃষ্ট অথবা নির্বিকার হই।
১০. ১৭ পার করলে বায়োলজিকাল বয়স আর গুরুত্ব বহন করে না। ১৯ কিংবা ৭৯, সবাই আমার বন্ধুস্থানীয় যদি না শিষ্যত্ব গ্রহণেচ্ছু হয়৷ তবে রোমান্টিকতা, চিঠি লেখা কিংবা ইনফ্যাচুয়েশন তৈরির ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নারীকে বায়োলজিকালি ১ দিনের হলেও আমার চাইতে অগ্রজ হতে হবে।
১১. গল্প শুরু করলে কখনো সময়ের হিসাব রাখি না। অপরপক্ষ আলাপ সমাপ্ত না করা অবধি চলতেই থাকে।
১২. নির্বোধ এবং ন্যাকা— এই দুই বৈশিষ্ট্যের মানুষের সঙ্গে মেলামেশার ক্ষেত্রে ৫ মিনিটের পর থেকেই অসহায় বোধ করি।
১৩. নাম এবং ভয়েস পছন্দ হলে সেই সমস্ত মানুষের প্রতি ক্রেজিনেস দেখাই। বোল্ডনেস, ইনডিপেনডেন্স, ডার্কনেস আমার জন্য চুম্বক৷ হিউমার, উইট, স্যাটায়ার সম্পন্ন মানুষের সঙ্গে বারবার আলাপ করতে চাই।
১৪. দৈহিক সৌন্দর্যের আবেদন আমার কাছে সর্বোচ্চ ১৯%; বিপরীত লিঙ্গের সৌন্দর্য আমার কাছে ভয়েস, চুল এবং হাসি। কোনো নারী মেন্টালি ইনডিপেনডেন্ট-উইয়ার্ড-ইন্টেলিজেন্ট না হলে ভয়েস-চুল-হাসিকেও আর সৌন্দর্যময় লাগে না৷ পছন্দের নারী ১১ লাখ সম্পর্কে জড়ালেও ভাবান্তর হয় না, কেবল সেই ১১ লাখের মধ্যে আমার বায়োলজিকাল ভাই এবং শিষ্যস্থানীয় কোনো পুরুষ থাকা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। গুরু-শিষ্য একই নারীর প্রতি আকৃষ্ট হওয়া আমার রুচিবিরুদ্ধ।
১৫. আমার জীবনে স্থায়ী কোনো মানুষেরই প্রয়োজন নেই। সবচাইতে পছন্দের মানুষকেও মাসে ৩-৪ দিনের বেশি দেখলে অস্বস্তি বোধ করি। প্রাত্যহিকতা একঘেয়ে এবং নিষ্প্রাণ।
১৬. অর্থ এবং জনপ্রিয়তার প্রতি বিন্দুমাত্র আকর্ষণ না থাকলেও খ্যাতি এবং ইমপ্যাক্টে আকর্ষণ সিন্ধুসমান। ক্ষমতা প্রশ্নে মাফিয়া নীতি পছন্দ। অর্থাৎ নিজে ক্ষমতাবান হওয়ার আকাঙ্ক্ষা রাখি না, কিন্তু ক্ষমতাবানকে বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে নিজের বলয়ে রাখতে চাই। যৌনতার ক্ষেত্রে যৌনতায় জড়ালাম এর চাইতে ‘যৌনতা হলেও হতে পারে’ সম্ভাব্যতা ফ্যান্টাসি অধিক আনন্দ দেয়।
১৭. অর্গানাইজড কোনো ধর্মের প্রতিই নৈকট্য বোধ করি না। তবে যারা ধার্মিক, তাদের অনুভূতি এবং বিশ্বাসকেও সর্বোচ্চ সম্মান করি। যুক্তি-তর্ক বা কটাক্ষের মাধ্যমে তাদের ধর্মীয় ভাবধারাকে প্রশ্নবিদ্ধ করি না
১৮. জীবনে যখন যা করি সবকিছুর একটাই উদ্দেশ্য- লেখার রিসোর্স এবং ক্যারেক্টার সংগ্রহ।