আজ মহাবিস্ময়কর এবং একমেবাদ্বিতীয়ম দিন আমার জীবনে।
জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, প্রেমবার্ষিকী, ক্যারিয়ার মাইলফলক— কোনো শর্তই পূরণ হয়নি আজ, তবু এটি আয়ুসীমার উজ্জ্বলমতম নক্ষত্রময় দিন!
শুধুমাত্র ব্যক্তিগত খামখেয়ালিপনায় এই দিনটিও রূপান্তরিত হলো গতানুগতিক মুড়িভাজায়! নিদেনপক্ষে সকল সুহৃদকে জিলাপি আর কমলা পারসেল করার মাধ্যমে আনপ্যারালেল এই দিনটিকে সেলিব্রেট করতে পারতাম।
কিন্তু যাদের পারসেল করছি তাদের মনোজগতে যদি স্ফূলিঙ্গই তৈরি না হলো, এর সঙ্গে নির্বাচনকালীন লিফলেটের প্রভেদ নেই সামান্যতমও।
আজ ১৯.৭.২৩!
জীবদ্দশায় এই ৩ সংখ্যার সম্মিলন পুনর্বার দেখার ভাগ্য জুটবে না।
ভারতে ৪১ দিনের একাকী আত্ম অন্বেষণ পরিভ্রমণ পরিকল্পনায় এতটাই বিভোর, প্রায় সবকিছুই চলে যাচ্ছে সাইডলাইনে।
নইলে ১০৯ জন সুহৃদের ঠিকানায় পৌঁছে যেত জিলাপি আর কমলা! চেয়েছিলাম কিন্তু পাঠালাম না, তাতে কি ইচ্ছার লাবণ্য বিবর্ণ হলো খানিকটা?
আমার রায় ‘নাহ’
সংখ্যাপাগল মানুষের আধিক্য তৈরি হলে সংখ্যা উৎসব হয়তবা বার্তাবাহী হয়ে উঠত।
এখনকার সেট আপ এ সংখ্যার মালিকানা নিয়েছে গণিত, কারো সংখ্যাপ্রেম তখনই গ্রহণযোগ্যতা পাবে যদি সে নাম্বার থিওরি সম্বন্ধে প্রভূত জ্ঞান অর্জন করে।
এই চিন্তাকাঠামোর সঙ্গেও একমত নই।
সংখ্যার প্রতি আকর্ষণ ছিল জন্মগত। একসময় লক্ষ্য করলাম জোড় সংখ্যা একঘেয়ে লাগে, আকৃষ্ট হওয়া সংখ্যাগুলোর সবই মৌলিক সংখ্যা! ‘সাত’ এর প্রতি মনোযোগ অন্য সকল সংখ্যার চাইতে তীব্র! এক ৭ যথেষ্ট নয়, আরো ৭ জড়ো করা দরকার, সেখান থেকেই ৭৭৭ সংখ্যাটা আমার জীবনে হয়ে উঠে অপার্থিব গন্তব্য, তথা আইডেন্টিটি!
যেহেতু প্রচলিত রিয়েলিটিকে সবসময় রিক্রিয়েট করি, এবং বসবাস করি ব্যক্তিগত ইলিউশন বাবলে, কখন যেন আবিষ্কার করি দ্রবীভূত হয়েছি 777 এ, সেখান থেকেই ‘Himalay777’ অখণ্ড আইডেন্টিটির জন্ম।
সমগ্র ব্যাপারটাই ১৯৯৪-৯৫ কালের, অর্থাৎ বয়স ১০ এ পৌঁছানোর পূর্বে, ২০০৫ এ ইমেইল আইডি খোলার মাধ্যমে Himalay777 এর জাগতিক উন্মোচন, এবং ২০০৮ এ সামহোয়ারইন ব্লগে লেখালিখির অভিযাত্রাও হিমালয়৭৭৭ হিসেবেই!
সন্তানের নামকরণ সংখ্যায় রাখার চিন্তাটাও সংখ্যা উন্মাদনা থেকে, লিখেছি বহুবার। ১৯, ২৩ আর ৭ অর্গানাইজড রিয়েলিটিতে একই লাইনে, প্রথম এবং শেষবারের মতো! হ্যালির ধুমকেতুও তবু ৭৬ বছর পরে দেখা দেয়, এই তারিখটার দেখা মিলতে বেঁচে থাকতে হবে আরো ১০০ বছর! মানুষের শরীরের বায়োলজি তা অনুমোদন করবে না। আক্ষেপে ভুগবো?
মেলানকলি বা বিষাদ থেকেই জন্ম নেয় সৃজনশীলতা!
আপনার মন্তব্য হতেই পারে ‘মানুষ অন্ন-বস্ত্রের সংস্থান নিশ্চিত করতেই জীবনিশক্তি ফুরিয়ে ফেলছে, সংখ্যার আদিখ্যেতা সেখানে অপাঙক্তেয়’
কিংবা ‘১৯.৭.২৩ তোমার জন্য মহাচার্মিং হতে পারে, আমার জীবনে তার সিগনিফিক্যান্স কোথায়? এই আরোপিত উচ্ছ্বাস নিরর্থক’
সবগুলো মন্তব্যই যথার্থ।
খুশিমনে গ্রহণ করে রিসাইকল বিনে জমা রাখলাম।