সাবরিনা হুসেনের লেখা বন্দিনী বইটির কলেবর মাত্র ১২৮ পৃষ্ঠা, ২ ঘন্টাতেই শেষ, কিন্তু বইটি প্রসঙ্গে লিখতে আমাকে গুগলে পুরনো লেখাপত্র পড়া আর ইউটিউব ভিডিও দেখায় ব্যয় করতে হলো সাড়ে ৩ ঘন্টা।
প্রতারণা মামলায় ৩ বছর সাজা ভোগকারী ব্যক্তি যখন জেলজীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে বই লিখেন, আমার ব্যক্তিগত বোঝাপড়া বলে, তার জেলে যাওয়ার পূর্বাপর প্রেক্ষাপট না জেনে কেবল বই পড়াটা ভুল ডিরেকশনে ধাবিত করে।
অবধারিত জিজ্ঞাসা ছিল বই লেখার মোটিভ কী?
সম্ভাব্য অপশন ছিল ৪টি-
১. এটেনশন পাওয়া
২. নিজের অপকর্মে আত্মপক্ষ সমর্থন করা
৩. সামাজিক পুনর্বাসন, তথা ইমেজ পুনরুদ্ধার
৪. ভিক্টিমাইজেশনের মাধ্যমে সিমপ্যাথি পাওয়া
গুগল বলছে সাবরিনা ১৯৯৩ সালে এসএসসি পাশ করেন ঐতিহ্যবাহি ভিকারুননিসা নুন স্কুল থেকে, ডাক্তারি পড়েছেন সলিমুল্লাহ মেডিকেলে, ২৭ তম বিসিএস এ উত্তীর্ণ হন, কার্ডিয়াক সার্জন হিসেবে পোস্টিং ছিল সোহরাওয়ার্দি হাসপাতালে, ঘুরেছেন বিশ্বের বহু দেশ। তার বর্তমান বয়স ৪৭+, নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়েছেন, পেশাগত জীবনেও সর্বোচ্চতা দেখেছেন— এটেনশন যা পাওয়ার সবসময়ই পেয়েছেন। এই পর্যায়ে এসে ওই বস্তু থেকে মোহমুক্তি ঘটে গেছে তার, অনুমান করি৷ মোটিভ ১ তাই বাতিল।
মোটিভ ২ ট্রিকি। সাবরিনা যদিওবা জামিনে আছেন, যতদূর পড়লাম তার মামলা এখনো চলমান, এবং ১১ বছরের কারাদন্ড পেয়েছেন। উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন, রায়ের বিরুদ্ধে। তিনি বলছেন তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। যদি পালটা প্রশ্ন করা হয় জেকেজি হেলথ কেয়ার করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহের অনুমতি কীভাবে পেল, এবং ইউটিউবে তার যেসব বক্তব্যের ভিডিও পাওয়া যায় সেগুলো জেকেজি এর মুখপাত্র হিসেবেই। সে কোম্পানির চেয়ারম্যান কিনা, তার দাবির প্রেক্ষিতে যদিওবা মেনেও নিই, তাতে সাক্ষাৎকারগুলো কি মিথ্যা হয়ে যায়? সাবরিনার বইতে এই প্রশ্নের উত্তর নেই, বরং তাকে ফাঁসানো হয়েছে, আবহটাই প্রাধান্য পায়। মোটিভ ২ তাই বাতিল নয়, তবে তা বাস্তবায়িত হয়েছে খুবই সূক্ষ্ম উপায়ে।
তবে আমি প্রশ্ন করতে চাই অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে। সাবরিনা যদি মনে করেন তার বিরুদ্ধে মামলা ষড়যন্ত্রমূলক, আদালতে প্রমাণ কেন করতে পারলেন না? বর্তমানে তিনি আইনজীবী হওয়ার প্রক্রিয়ায় আছেন, বইয়ের উৎসর্গে লিখেছেন ‘যারা বিনা অপরাধে জেল খাটেন’, তবে কি তিনি বলতে চাইছেন তাকে ১১ বছরের সাজা দেয়াটা প্রহসনমূলক বিচার? আদালত নাহয় তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে রায় দেয়, কিন্তু বই তো বিবেকের আদালত। সেখানে তো লিখতেই পারতেন কীভাবে তাকে ফাঁসানো হলো। বিচারাধীন মামলা বলে যদি সেসব লেখা না যায়, বারবার বিনা অপরাধে জেল খাটার প্রসঙ্গ তোলাও কি একই কাতারে পড়ে না? এটাও তো আদালত অবমাননাই হলো বোধহয়।
মোটিভ ৩ এবং ৪ আদতে অঙ্গাঙ্গিভাবে সম্পৃক্ত। কেবল অন্তিম গন্তব্য আলাদা।
বই লিখতে প্রতিভা আবশ্যকীয় শর্ত নয়, অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন যে কেউই লিখতে পারে, লিখে না ধৈর্যের অভাবে।
সাবরিনার কেইসটাকে আমরা বইয়ের পরিবর্তে যদি ‘বই মেলা এবং ২৯ দিন সময়’ এই দুই প্রকরণে বিভক্ত করি, সেখান থেকে জনসমাগম এবং দীর্ঘদিন ধরে চলা উৎসব, ফ্যাক্টর দুটো পেয়ে যাই এবং সেখান থেকেই তার মোটিভ সম্বন্ধে ইমপ্রেসন পাওয়া যায়।
আগামীতে সাবরিনাকে আমরা যদি একজন এক্টিভিস্ট হিসেবে দেখি, যার আপাত সম্ভাব্যতা পর্যাপ্ত, সেক্ষেত্রে ৩ বছর কারাভোগ তার পোর্টফোলিওতে হবে সবচাইতে বড় ইনভেস্টমেন্ট৷
এবার তবে বইয়ের আলাপ হোক।
সাবরিনার বইয়ের বক্তব্যকে যদি মাত্র ১টি লাইনে উদ্ধৃত করি- ‘পুরুষের জেলে যাওয়ার ১০০ টা কারণ থাকে, নারীর একমাত্র এবং কেবলমাত্র কারণ যৌনতা’!
তার বইয়ের এই বক্তব্য যে স্বয়ং নারীর প্রতিই তীব্র অবমাননাকর, এবং শরীরকেন্দ্রিক ম্যানিপুলেটিভ কথা-বার্তা দিয়ে যে আদতে শক্ত বুনিয়াদি কোনো ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা করা যায় না, একাডেমিক মেধাবি ক্যারিয়ারিক ধুরন্ধর সাবরিনার এ এক কৌশলগত বিপর্যয়!
সাবরিনা বইতে যতগুলো নারী ক্যারেক্টারের উপস্থাপন করেছেন, প্রতিটি গল্পেরই রুট যৌনতা৷ এটা কি নিছকই কাকতালীয়?
নাকি তাকে একজন নিম্ফোম্যানিক সন্দেহ করা অধিক বাস্তবসম্মত?
চরিত্রদের দৈহিক গঠনের বর্ণনা, যৌন অতৃপ্তি— অবদমনের বাইরে যে বিশাল কষ্টের এবং বঞ্চনার জীবন, তার কতটুকু তিনি ধারণ করতে পারলেন?
দুটো গল্প পড়াকালীন রীতিমত স্টোরি ভিত্তিক পর্ণ ফিল্ম দেখার অনুভূতি পেয়েছি।
-জরিনা নামের এক নারী। জেলখানায় সে সমকামীতার অভিযোগে অতিরিক্ত শাস্তি পেয়েছে অভ্যন্তরীণভাবে। সাবরিনার দাবি সে ন্যাচারাল সমকামী নয়। দীর্ঘদিন জেলে থাকতে থাকতে কামনাবশত। জরিনা সুন্দরী, স্বামী তার যৌন চাহিদা পুরোপুরি মেটাতে অপারগ, যদিও সন্তানের জন্ম দিয়েছে। স্বামী তাদের বাসার নিচতলার ড্রাইভারের রুমে এক রং মিস্ত্রিকে ভাড়া দেয় সস্ত্রীক। একদিন রুমের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সঙ্গমকালীন শীৎকার শুনতে পেয়ে শিহরণ বোধ করে, খাস ভাষায় হর্নি হয়ে উঠে। রং মিস্ত্রিকে এক রাতে ঘরে ডেকে নেয়। শুরু হয় লীলাখেলা৷ স্বামীকে খুন করে, পুত্র দেখে ফেলায় যৌনসঙ্গী হত্যা করে তাকেও! এই গল্পটায় জরিনাকে আমরা একজন সেক্স বুভুক্ষুর বাইরে মানুষ হিসেবে দেখতে পারি কি?
– মামণি নামের এক অপ্রকৃতিস্থ নারী৷ মোটামুটি গ্রামীণ স্বচ্ছল পরিবারে জন্ম। ৫ ভাইয়ের এক বোন। তার মানসিক ভারসাম্যহীনতার সুযোগে গ্রামের ছেলে-বুড়ো সুযোগ মতো মলেস্ট করতে থাকে। পারিবারিক সম্পত্তির লোভে এক শিক্ষিত ছেলে বিয়ে করে। মামণি এতদিন কিছু না বুঝলেও স্বামী রতিক্রিয়া ঠিকই উপভোগ করে। স্বামী চলে যায় শহরে, তার প্রবাসী বড় ভাই এক সময় দেশে ফেরত আসে৷ মামণির জা কে আমরা দেখি পৃথুলা রূপে, যার প্রতি স্বামীর যৌন আকর্ষণ নেই, তার নজর ভ্রাতৃবধু মানসিক ভারসাম্যহীন মামণির প্রতি৷ একদিন জাপ্টে ধরে, মামণি নিজেকে রক্ষা করে। আরেক রাতে ধর্ষণের চেষ্টা করে, ভাসুরের ছোট ছেলের কারণে রক্ষা পায়। প্রতিশোধ নিতে ভাসুর নিজের পুত্রকে গলা টিপে হত্যা করে, সব দোষ মামণির!
মামণি কি কেবলই একটা শরীর ছিল? তার গল্পের সঙ্গে ভারতের মাল্লু মুভিগুলোর স্ক্রিপ্টের পার্থক্য কই!
আমরা আরো যত ক্যারেক্টার পাই কেউ পরকীয়া প্রেমিকের পুরুষাঙ্গ কেটেছে, ৫৬ বয়সের নারী ২৫ বয়সী প্রেমিককে ৫ খন্ড করেছে, ষাটোর্ধ্ব নারী যে নিজেই চলতে পারে না সেও খুন করেছে গৃহপরিচারিকাকে যে কিনা তার স্বামীর যৌন সঙ্গী, বইয়ের ৪০ পৃষ্ঠা অতিক্রমের পর থেকেই মনে হতে থাকে বইয়ের বন্দিনীরা কোথায়, এই বইয়ের নাম কেন যৌন্দিনী হলো না!
আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে সোনা চারাচালানে আটক নারী, তার গল্পেও যৌনতা৷ এক মেয়ের গল্প পাই যাকে তার রক্ষক একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করে রাখে, মাসে ৫-৬ দিন আসে। একাকীত্ব মোচনে সে এক তরুণীকে রাখে সাবলেট। কিছুদিন পরে রক্ষক সেই তরুণীর প্রতি আকৃষ্ট হয়, একদিন যৌনতা শেষে দুজন অন্তরঙ্গ অবস্থায় শুয়ে আছে, সেই মেয়ে বাইরে থেকে দুজনের অন্তরঙ্গ ছবি ভিডিও করে ফেসবুকে আপলোড করে, তরুণী ডিজিটাল আইনে মামলা দিলে গ্রেফতার!
ইসরাত নামের এক তরুণীকে বাসা থেকে যা টাকা পাঠায় জমিয়ে রাখে, কারণ জেল থেকে বের হলে বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে বিভিন্ন হোটেলে চেকইন দিবে, সব খরচ বয়ফ্রেন্ড একাই দিলে নিজেকে মনে হবে সেক্সওয়ার্কার!
প্রতিটি গল্পে যৌনতার আধিক্যে আড়ালে চলে যায় জেলের ভেতরে খাবারের কষ্ট, মশা-গরম আর অন্যান্য প্রতিকূলতায় মানবেতর জীবনযাপন; এর মধ্যেও পয়সাওয়ালারা বন্দীরা কতটা আয়েশে থাকতে পারে। এই গল্পগুলোকে লাগে ৫০ কেজি চালের মিশ্রণে ৫ টুকরো গোশত!
অথচ প্রত্যেক যৌনতার গল্পেও একটা মানবিক এবং দানবিক দিক থাকে। সাবরিনার আপাত নিম্ফোম্যানিক মনোজগতে সেই দিকটা দেখাই হলো না।
বইজুড়ে যে পড়াশোনার জন্য বিষম গর্ববোধ তার, লেখায় যদি বহি:প্রকাশ না-ই ঘটলো, পড়াশোনার ফলাফলটা কোথায়!
গল্পগুলো থেকে তার উপলব্ধিই বা কোথায়!
বরং আমরা দেখি কীভাবে তিনি হয়ে উঠেন সকলের মধ্যমণি, জেলখানায় জন্ম নেয়া শিশুর নাম রাখা হচ্ছে সাবরিনা। অভিমানে সিদ্ধান্ত নিলেন ডাক্তারি ছেড়ে দিবেন, পরক্ষণেই প্রসূতির নরমাল ডেলিভারি করান তেমন কোনো যন্ত্রপাতি ছাড়াই৷ তল্লাশি করার সময় কাপড় খুলতে হয়, কয়েদিরা নানা ধরনের নিষিদ্ধ দ্রব্যাদি লুকিয়ে আনে। তাকে তল্লাশি করে পাওয়া গেল একটামাত্র কলম, সেই কলম বেহাত হওয়ায় তার কান্নায় পাহাড়ি ঢল নামে!
বইতে তাকে একজন মেলোড্রামাটিক চিন্তার ব্যক্তি হিসেবে যেভাবে পোরট্রে করেছেন, বলা যায় অবচেতনভাবেই নিজের স্ট্যান্টবাজির উইটনেস হয়েছেন স্বয়ং!
তিনি বিদ্রোহী নাকি বিপ্লবী? বরং ভিক্টিমাইজ করার সচতুর প্রবণতা প্রকট
– যখন বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েছেন দিব্যি চলে গেছে, মামলায় নাম দেয়ার পরে মনে হলো নারী বলেই তিনি সহজ টার্গেট!
– যদি মনের জোর থাকে সোস্যাল মিডিয়াতে তার বুকের খাঁজ, শরীরের ভাঁজ, বয়ফ্রেন্ডের সংখ্যা নিয়ে কত কথা হচ্ছে, একে তুড়িতে উড়িয়ে দেয়ার মতো এরোগেন্স তার কোথায়! একজন চিকিৎসকের যে ধরনের ছবি আমরা দেখে অভ্যস্ত, তার ছবিগুলো যে সেই ইমেজের প্রতিনিধিত্ব করে না, বরং বিভিন্ন নায়িকা বা মডেলদের সাথেই বেশি মানায় একথা কি অস্বীকারযোগ্য? বইতে তার লেখা একমাত্র যে ছড়া কবিতা সেখানেও কতজনের সাথে শুয়েছে এ নিয়ে মানুষের কৌতূহল, এটাই প্রধান বক্তব্য— ভাবনায় এবং মননে তিনি স্বয়ং যৌন ফ্যান্টাসিতে ঘোরগ্রস্ত! মানুষের মগজ বা হৃদয় কি জননাঙ্গের কাছে বারবার হেরে যায়? এই মৌলিক ফিলোসফিকাল জিজ্ঞাসা সারা বইতে কোথায়!
বরং তিনি কেবল উস্কানিই দিয়ে গেছেন মেয়ে তুমি মাংস পিণ্ড, তোমাকে খেতে জিহবা লকলক করছে পুরুষের!
সুতরাং তার চিন্তার মৌল ভিত্তিই তীব্রভাবে অফেন্সিভ!
আমরা দেখলাম দিলরূবা নামের এক নারী বাংলাদেশ থেকে চাচার সাথে পালিয়ে যান ভারতে। চাচা ধর্ষণ করে বিক্রি করে দেয় পতিতালয়ে। ক্রমে নৈপুণ্য দেখাতে দেখাতে সে গুজরাটে স্থায়ী হয়, তৈরি করে বৃহৎ নারী পাচারের সিন্ডিকেট৷ মালয়েশিয়া, দুবাই সহ মধ্যপ্রাচ্যে নারী পাচার করে। রিমি নামের এক নারীকে আনে বাংলাদেশ থেকে। এক মাস প্রশিক্ষণের পর খদ্দেরের সাথে হোটেলে পাঠালে সে যৌনতায় অস্বীকৃতি জানায়৷ বিভৎস নির্যাতনেও দেহব্যবসায় সম্মতি আদায়ে ব্যর্থ হয়ে দেশে ফেরত পাঠায়। তার অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার দিলরূবা৷ কিন্তু দেশে ফিরে রিমি অভাবের তাড়নায় এক সময় বোধ করে শরীর বিক্রি করে হলেও সে ভালোভাবে বাঁচতে পারত, দেশে তো বেঁচে থাকাই দায় হয়ে উঠেছে। জেলে সে দিলরূবার সাথে দেখা করে, ক্ষমা চায়, মামলা প্রত্যাহার করে নেয়, দিলরূবাকে জানায় সে প্রস্তুত!
মোরাল অব দ্য স্টোরি হলো, অভাবে দেহ ব্যবসা সমাধান!
সাবরিনার একটা দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নেয়া উচিত, সেক্সুয়ালিটি বিষয়ে তার ধারণা কী, মানুষের ড্রাইভিং ফোর্স অনেকরকম, তার কেন মনে হয় সেক্সুয়ালিটিই একমাত্র?
বইয়ের বর্ণনাকে যদি ডিকোড করি, তিনি মানসিক ট্রমার মধ্যে আছেন। অসম্মানের বিভীষিকা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি অপরাধ করেছেন, শাস্তি পেয়েছেন, সুতরাং এখনো তাকে প্রতারক বলা সামাজিক অপরাধ।
গুগলে জানলাম তার দুই সন্তান। কোথাও তাদের উল্লেখ পেলাম না। বাবা-মা, আর এক মামা যে সম্প্রতি প্রয়াত৷ কোনো বন্ধুও নয়। অর্থাৎ আপন বলতে সকল মানুষই তার সঙ্গ পরিত্যাগ করেছে৷
তার মতো ইমোশনালি ভালনারেবল মানুষের জন্য এই বেদনার ভার আন্দিজ পর্বতমালার সমান হওয়ার কথা।
বরং যতটুকু মেধা ছিল, সেই আলোকে জেলের অভ্যন্তরীণ অন্ধকার জগতকে তিনি যেভাবে ফিল করতে পারতেন বা এমন কিছু অন্তর্দৃষ্টি দেখাতে পারতেন যা একজন গড়পড়তা কয়েদির চিন্তাতেও আসবে না।
ব্যক্তিগত বৈকল্য অথবা পূর্বতন ভোগী জীবনের পারম্পর্যে সেই এক্সপ্লোরেশনের যে কিছুই হলো না এজন্য তার প্রতি সমব্যথী এবং বৃহদাকারে ক্ষোভ প্রকাশ করলাম।
জনাব সাবরিনা, মহাজীবনের জার্নিতে যৌনতা অতি ক্ষুদ্র এক স্টেশন, একেই ডেস্টিনেশন ভাবার ভুল পরবর্তী বইগুলোতে না করাই বৃহত্তর অর্থে মিনিংফুল হতে পারে৷ ক্ষুধা, তৃষ্ণা, কাম এর অনুভূতি মানুষের জন্মগত। পরিবেশ থেকে সে যা লাভ করে তার সঙ্গে বেসিক ইনস্টিংটকে কোরিলেট করতে পারেন, তবে অতি নির্ভরতা বিকৃতির বহি:প্রকাশ!