ফেসবুকে কোন বইয়ের রিভিউ দেওয়া এই প্রথম। রিভিউ লিখার পূর্বে কিছু তথ্য দেওয়া জরুরী। প্রথমেই বলে নেই বইটি নামহীন এবং দামহীন। সাধারন বইয়ের দোকানে বইটি পাওয়া যায় না। বইটি নিতে চাইলে বইয়ের লেখককে মেইল করতে হবে ঠিকানা সহ। তিনি একটা বিকাশ নাম্বার পাঠাবেন সে নাম্বারে যার যার বিবেচনা বোধ থেকে যে পরিমাণ টাকা পাঠাবেন সেটাই গ্রহণযোগ্য। তবে বইটির আত্মিক মূল্য আছে। একটি রিভিউ এবং ১১ টি প্রশ্ন। আত্মিক মূল্য পরিশোধের প্রয়াসেই এই রিভিউ। বইটি লিখেছেন Mahfuz Siddique Himalay ভাইয়া। যেহেতু তাকে ট্যাগ করেই লিখা, তাই লেখক সম্পর্কে কিছু জানতে চাইলে তার আইডিতে ঢু মারাই শ্রেয়।

এইবার আলোচনা হোক বইয়ের কন্টেন্ট সম্পর্কে। আমি বইটার জন্য মেইল করি ১৩ই জুলাই। আর বইটা হাতে পাই ১৬ই জুলাই। আর রিভিউ লিখছি ১৯ অক্টোবর। এই দীর্ঘ দিন বইটা নিয়ে আমি ঘুরেছি। যেখানেই গিয়েছি বইটা সাথে ছিল। তাই অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেছে বইটা কিসের? আমি প্রতি বারই কনফিউজড ছিলাম কি বলবো? লেখকের দাবী বইটা বায়োফিকশন ঘরানার। এইটা শুনলেই আমার মনে হয় কল্পজগতের কারো কাহিনী নিয়ে লিখা। কিংবা কাহিনীটা কাল্পনিক। কিন্তু বইটা পড়ে আমার কাছে মনে হয়েছে যে জগতকে প্লাটফরম করে গল্পটা লিখা তার জাগতিক নিয়ম কানুন গুলো বাস্তব জগতের সাথে মেলে না, কিন্তু চরিত্র কিংবা উপজীব্য বিষয় গুলো বাস্তব জাগতিক দুনিয়ারই প্রতিফলন। তাই প্রথমেই আমি সবাইকে এটা বলতাম যে এটা পাগলের বই।( এর জন্য লেখকের কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থী।) যদিও এটা মুলত হিউমেন সাইকোলজির বাইবেল মনে হয় আমার কাছে, তবুও পাগলের বই বলার কারণ আমার পরিচিত পরিমন্ডলে আমি পাগলামির জন্য পরিচিত এবং আমার কিছু ভালো লেগেছে মানে সেটা পাগলের বিষয় বস্তু এই ভাবেই সবাই বিষয়টা ইন্টারপ্রিট করে। আর হিউমেন সাইকোলজি বলতে আমরা যা বুঝি এই বইটা তার ব্যাকরণ নিয়ম কানুন কোনটাই মানে নাই। একদমই ভিন্ন ঘরানার বিষয় বস্তু যেহেতু পাগলের কর্মকান্ড বলে আমাদের সমাজে পরিচিতি পায়, তাই এইটাকে পাগলের বই বলাটা হয়তো খুব একটা ভুল ইন্টারপ্রিটেশন নয়। তবে বইটাকে হিউমেন সাইকোলজি প্লাস বায়োফিকশনের কম্বিনেশন বললে ভুল হবে না মনে হয়। বায়োগ্রাফি বলার ফাকে হিউমেন সাইকোলজি নিয়ে আলোচনা, কারন লেখকের জীবনটাইতো কেটেছে মানুষ পর্যবেক্ষনে। তাই জীবনের গল্পই যে মানব বিশ্লেষণের বিশদবিবরণ এটা হয়তো কিছুটা আইডিয়া দেয় বইয়ের কন্টেন্ট সম্পর্কে।

এটা হচ্ছে বইয়ের সংজ্ঞা। সুতরাং সম্পূর্ণ বইটাকে রিপ্রেজেন্ট করতে গেলে এই ফেসবুকের দেয়াল যথেষ্ট কিনা জানি না। তার চেয়েও ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে বইয়ের পুরো কনটেন্ট আমি ধরতে পারিনি। সর্বোচ্চ ১১% থেকে ১৭% আমার বোধগম্য হয়েছে বাকি ৮৯% থেকে ৮৩ % বুঝতে হলে আমার চিন্তা জগতকে আরো বেশি বাড়াতে হবে। তবুও এই ১৭% কেই যদি আমি বর্ণনা করতে যাই একটা ৪০০০ পেজের বই হয়ে যাবে। বিহাইন্ড দ্যা লাইনে অনেক কিছু বলা আছে। সত্যি বলতে এই বইটার রিভিউ লিখার যোগ্যতা আমি রাখি না। আমার মেন্টাল ম্যাচিউরিটি এতটাই লো কোয়ালিটির। আর ম্যাচিউরিটি গ্রো করবে কিনা অথবা ততদিন পর্যন্ত রিভিউ লিখার আগ্রহ থাকবে কিনা সেই দোটানা থেকেই স্বল্প জ্ঞান নিয়ে রিভিউ লিখতে বসা। বইয়ের মহৎ উদ্দেশ্যটা আমাকে টানে। কিছু ব্যতিক্রমী চিন্তাধারার মানুষকে একত্রিত করা আর তার মাধ্যমে মানুষের জীবনে পজিটিভ ইম্প্যাক্ট ফেলা। সহভাবুকের মতো ব্লেজিং দুনিয়ায় নেই। কিংবা মানুষের জীবনে পজেটিভ ইম্প্যাক্ট ফেলার মতো পূণ্য আর কিছু নেই। তবুও এই রাস্তায় হাঁটার জন্য জাগতিক পঞ্চইন্দ্রিয়কে জয় করার সাহস এখনো সঞ্চয় করতে পারি নি। তবে কোন দিন পারলে দেখা হবে ঠাকুরগাঁওয়ে।

বইয়ের রিভিউ বা প্রতিক্রিয়া বলতে আমরা বুঝি বইটির সমালোচনা, ভালো লাগা মন্দ লাগা, বই সম্পর্কে অনুভূতি। আমি শুরুতেই বলেছি আমি এই বিষয়টা সম্পর্কে এতটাই আনাড়ি যে সমালোচনা করা তো দূরে থাক ভালো মন্দ বলারও যোগ্যতা রাখি না।তাই এই রিভিউর পুরোটা জুড়েই থাকবে এই বই সম্পর্কে আমার অনুভূতি।

এত এত পজেটিভ কথা শুনার পর সবার কাছে মনে হবে যে বইয়ের সবকিছুই হয়তো আমার খুব ভালো লাগার, এটা ভাবাই স্বাভাবিক, আমি হলে তাই ভাবতাম। কিন্তু লেখকের সাথে অনেক জায়গায় আমার দ্বিমত আছে, কিন্তু শুরুতেই তো বলেছি আমি সমালোচনা করার যোগ্যতা রাখি না, আর তার চেয়েও বড় কথা আমি দ্বিমত গুলা শুধু অনুভব করতে পারি শব্দে প্রকাশ করে উঠতে পারি না, তাই কনফ্লিক্টে না জড়াই। আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় খুব প্রবল। আর অনেক কিছু লজিক ছাড়াই ফিল করতে পারি। যেহেতু প্রকাশ করতে পারছি না তাই বলাটা অর্থহীন।

পুরো বইটা জুড়ে লেখক তার পরিচিত অপরিচিত অসংখ্য মানুষের বর্ণনা দিয়েছেন অত্যন্ত নিরপেক্ষ ভাবে যেটা আমার কাছে প্রশংসার দাবি রাখে। একজন মানুষের দোষ এবং গুণ এমন ভাবে বলা যে প্রথমে কাউকে খুব অপছন্দের মনে হলেও পরবর্তীতে তার গুণ গুলো শুনে তাকে পছন্দ করা যায়। লেখকের সাথে আমার ব্যাক্তিগত পরিচয় নেই। বই নেওয়া সূত্রে মেইল আর মেসেঞ্জারে দুই তিন লাইন কনভারসেশন ছাড়া আমি তেমন কিছুই জানি না। কিন্তু তার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা এবং তা শব্দে ইন্টারপ্রিট করার ক্ষেত্রে তার এবিলিটি আমাকে মুগ্ধ করেছে।তার বইয়ের অন্যতম দুইটা চরিত্র লেখকের বড় আপা, আর সোহাগ ভাইয়ের সাথে দেখা করতে চাই। এটা এখনো ইচ্ছায় পরিণত হয়েছে কিনা জানি না। তবে ৫ বছর পরও যদি দেখা করার ক্ষেত্রে ঠিক এমন আগ্রহবোধ করি তাহলে হয়তো সেটা ইচ্ছায় রুপান্তর হবে।

বই পড়ার পর আমার কাছে মনে হয়েছে লেখক বইটার মধ্যে একটা ফিল্টারিং প্রসেস এপ্লাই করেছেন। ঠিক ড্যান ব্রাউনের এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস বইটাতে ইলিউমিনাতি সংগঠনের সদস্য নেওয়ার ক্ষেত্রে যেমন ফিল্টারিং প্রসেস ছিল। Its open for all but only genius can find out it. আজকে রিভিউ লিখার ক্ষেত্রে আমি এটা করতে চাই। বইয়ের মতোই রেন্ডমলি অনেক কিছু বলতে চাই। পূর্বে কোন স্ট্যাটাস দেওয়ার ক্ষেত্রে ভাবতাম সবাই আমার মেসেজটা সঠিক ভাবে ইন্টারপ্রিট করতে পারবে তো? বা এত বড় লিখা পড়বে তো? আজকে শুধু লিখেই যাবো। যার বোঝার দায় সে ঠিক বুঝে নিবে। সবাই সব কিছু বুঝবার নয়।

বইয়ে দুইটা প্রধান চরিত্র আছে ৩১৭৯ আর ১১৫৭। শুরুতেই বলে নিই লেখকের সংখ্যা নিয়ে অবসেশন আছে। যে কোন মানুষকে সে সংখ্যা রূপে দেখে। যে কোন বড় বড় সংখ্যার গুণফল মুখে মুখেই বলে দিতে পারে। জাফর ইকবালের প্রডিজি বইটা যারা পড়েছেন তারা বিষয়টা কিছুটা বুঝতে পারবেন। তিনি সংখ্যার মাধ্যমে পরিচিত সকল মানুষকে তার চরিত্রকে ডিফাইন করতে পারেন। আমার নাম্বার ফোবিয়া আছে। এক সাথে অনেক নাম্বার দেখলে কেমন গোলমাল লাগে। তাই পুরো ব্যাপারটা আমি বুঝিনি। কিন্তু বই পড়া শেষে আমিও যে মৌলিক সংখ্যার প্রেমে পরেছি এবং সাবকনশাসলি আমিও নাম্বার ব্যবহার করতে শুরু করেছি এটা এখন বুঝতে পারছি। আমার এটা একটা দোষ কিংবা গুণ হতে পারে আমি যে কোন কিছু দেখলে শুনলে ফিল করতে পারি কিন্তু লজিক্যালী রিপ্রেজেন্ট করতে পারি না। কিন্তু পরবর্তীতে লজিক্যাল রিপ্রেজেন্টেশান খুঁজে পেলে তা রিলেট করতে পারি।
এইবার আসি ৩১৭৯ ও ১১৫৭ এর পরিচয়ে। এরা দুইজন বাস্তব দুইটা মানুষের চেহারা ধার করে নেওয়া লেখকের কাল্পনিক ২ টা চরিত্র যাদের সাথে লেখক সেলফ কনভারসেশন চালায়। তার মোট অবসেশন সংখ্যা ২৬। যার মধ্যে মাইকেল মধুসূদন দত্ত, গ্যালিলিও, টেন্ডুলকারের মতো ব্যাক্তিরাও আছে। এই অবসেশন জিনিসটা আমার ও আছে। আমি জানতাম না এদের অবসেশন বলে। বয়সের সাথে সাথে আমার অবসেশন গুলা রং বদলায়। গল্পের বই পড়ার সুবাদে আমার অবসেশন গুলা গল্পের বই কেন্দ্রিক। সাতকাহনের দীপাবলী, হেজাজের কফেলার হাসান, আর সীমান্ত ঈগলের বদর বিন মুগীরা চরিত্রটায় আমি খুব অবসেসেড থাকি। অবসেশন এক সময় এতটাই মারাত্মক ছিল যে প্লান করেছিলাম হাসান নামের কাউকে বিয়ে করবো।বাস্তব জীবনের কিছু মানুষ ও আমার অবসেশনের তালিকায় আছে। তবে এসব লেখকের অবসেশনের কাছে কিছুই না। বাস্তবতার গেড়াকলে এখন আমি এম্বিভার্ট পিপুল।

অবসেশন গুলোর সাথে সেলফ কনভারসেশনের মাধ্যমেই উঠে আসে মানব পর্যবেক্ষনের সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম বৈশিষ্ট্য। ব্যাক্তি জীবনে অসংখ্য ইন্টারভিউ নেওয়ার সুবাদে, এবং মনোযোগী শ্রোতা হওয়ার মতো অতি দুর্লভ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হওয়ার জন্য, তার পর্যবেক্ষন গুলাও দুর্দান্ত।

বিজনেস নিয়ে তার এক্সপ্লেনেশান গুলো পড়ার পর আমার প্রথমেই রেনে দেকার্তের কথা মনে পড়েছে। তার অনুভব করার ক্ষমতা এতটাই প্রবল ছিলো যে সাঁতার শেখার বই পড়ে প্রথমবার পানিতে নেমেই সে সাতাঁর কাটতে শুরু করেছিল। লেখক নিজে কখনো বিজনেস করে নি। কিন্তু বিজনেস সম্পর্কে তার পর্যবেক্ষন সত্যি অতুলনীয়। কিন্তু বিজনেস স্টার্ট বা কন্টিনিউ করার ক্ষেত্রে আমি সোহাগ ভাইয়ের সাথে একমত। যেহেতু আমি আগেই বলেছি আমি সমালোচনা করবো না, তাই কথা না বাড়াই। তার চেয়েও বড় কথা I feel in some cases there are something wrong with your strategy, but i can’t express it in word. As you promote the term better explanation, then oneday you will find it in a better way.
বিজনেস নিয়ে লেখা আরেকটা টার্ম Are you feeling cheated? এটা আমার কাছে দুর্দান্ত লেগেছে।

লেখক না বলে আমি ৭৭৭ সংখ্যাটা ব্যাবহার করতে পারি। এটা দিয়ে লেখক নিজেকে রিপ্রেজেন্ট করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।

বইয়ের আরেকটা আলোচিত বিষয় গালি। এখানে অনেক গালি ব্যবহার করা হয়েছে। মাইকেল মধুসূদন দত্তের মুখ দিয়ে অনেক বাজে কথা বলানো হয়েছে। মাইকেল মধুসূদন দত্ত কখনোই আমার আগ্রহের জায়গা ছিলো না। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম আলো বইটায় মাইকেল মধুসূদন দত্তকে যেভাবে রি প্রেজেন্ট করা হয়েছে আমি তাকে সে ভাবেই জানি। মনীষীদের জীবনী কিংবা কারো মুখ থেকে শোনা কথাকে আমি খুব একটা গুরুত্ব দিতে পারি না। কারণ আমি তাই জানছি যা আমাকে জানানো হচ্ছে। বিহাইন্ড দ্যা লাইন অনেক কিছু থেকে যায়। তাই শুনা কথায় জাজ করার অভ্যাসটা চেঞ্জ করার চেষ্টা করছি। আমাদের পর্যবেক্ষণ গুলো বড়ই এক পাক্ষিক। তাই সুনীলের বই এর মাইকেলের চরিত্রটা আসলেই খুব সম্মান যোগ্য কেউ নয়। আমার নিজেরও তার প্রতি ধারণা নেগেটিভ। যেখানে ঈশ্বরচন্দ্রের প্রতি আমার ভালোবাসা এতটাই বেশি যে সে আমার অবসেশনে রূপান্তর হয়েছে। তাই ৭৭৭ যদি মাইকেলকে বন্ধু বানিয়ে দুই চারটা গালাগালি করেও ফেলে সেটা ব্যাক্তি মাইকেলকে নয়। অবসেশনে থাকা মাইকেলের চেহারা ধার করা বন্ধুটাকেই করছে। আর গালি প্রসংগটার ক্ষেত্রে আমার ব্যাক্তিগত অভিমত হচ্ছে ইনন্টেনশানে। ভালো কাজ হোক আর গালাগালিই হোক ইনন্টেশনটা গুরুত্বপূর্ণ। যেমন আমরা মুসলিমরা আল্লাহর ইবাদাত করার জন্যই নামাজ পড়ি। কিন্তু কারো নামাজে দাড়ানোর উদ্দেশ্যটা যদি হয় দুনিয়াবি কিছুকে সন্তুষ্ট করা তখন নামাজ পড়াটা শিরকে রূপান্তরিত হয়। মুসলিমদের সবচেয়ে বড় গুনাহ যার কোন ক্ষমা নেই। জেনে না জেনে কত্ত ছোট্ট একটা ইন্টেনশন থেকে কত বড় একটা গুনাহ হয়ে যায় আমরা বুঝতেই পারি না। অথচ স্থুল কিছু অকারণ বিষয় নিয়ে শুধু শুধু মাতামাতি করি।

বই জুড়ে অসংখ্য সুন্দর কথা আছে যা বাণী হিসেবে সহজেই চালিয়ে দেওয়া যায়। সেগুলো কিছু দিয়ে দিচ্ছি।
১. আত্মজীবনী হলো শয়তানের কলমে লিখা ফেরেশতার জীবন।
২. সমগ্র কুরআনই সেলফ কনভারসেশনের দুর্দান্ত দৃষ্টান্ত। এর প্রতিটি শব্দ এবং বাক্য গভীরতায় সাংকেতিক; যা শুনি যা পড়ি এগুলো আবরণ, মূল মেসেজটা অন্য কোথাও; অন্য কোন রূপে থাকে।
৩. লিভ ফর এ রিজন।
৪.মানুষের মতো হারামি প্রাণি আর নাই, মুখে এক মনে আরেক।
৫.মানুষ হিসেবে এটাই আমাদের সীমাবদ্ধতা ; আমরা অপরকে বোঝার উদ্দেশ্যে বুঝি না, নিজের বুঝ গুলো তার কর্মকান্ডে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাই মাত্র।
৬. জন্ম থেকেই আমি কী যেন খুঁজছি, বিভিন্ন মানুষের মধ্যে, বস্তুর মধ্যে, কিন্তু কি খুঁজছি জানি না।( আমার ও ঠিক এই ফিলিংসটা হয় তাই শেয়ার দেওয়া।)
৭.জগতের কোন কিছুই সত্য অথবা মিথ্যা নয়, পুরোটাই চলে বেটার এক্সপ্লেনেশন নীতিতে।
৮.ফিলোসফিকাল ফ্রেন্ড আর ফিলোসফিকাল ব্রাদারহুড বিষয়টা ফিল করি ছোট বেলা থেকেই, কিন্তু কখনো শব্দে বিষয়টা রিপ্রেজেন্ট করতে পারি নি।
৯.একটা পূর্ণাঙ্গ বই হলো ভাবনা,কিন্তু বইয়ের ভেতরে শব্দ লাইন, অনুচ্ছেদ গুলো এক একটা চিন্তা।
১০. পৃথিবী চালায় ৩ টা ফেক্টর অর্থনীতি ,রাজনীতি ,সেক্স।
১১.বিচ্ছিন্নতা এক প্রকার ব্লেজিং। (প্রথম অনুভব করি ইতিকাফে বসার পর।)
১২.সমাজে ৯৯% মানুষ বড় কোন ক্রাইম করে না সমাজে কোন অবদানও রাখে না, তবুও এত জাজমেন্টাল কেন আমরা?
১৩.জগত জুড়ে বস্তুগত আকর্ষণকে প্রেম নামে চালিয়ে দেওয়ার প্রবণতার পিছনে একটা ঐতিহাসিক চক্রান্ত থাকতে পারে।
১৪. যখন তুমি সাঁতরে জল থেকে ডাঙ্গায় উঠে পড়েছো, সেই জল ঘোলা নাকি টলটলে তাতে তোমার কি? ডাঙ্গায় উঠে শরীর মুছে গন্তব্য রওনা হয়ে যাও।
১৫. মানুষ মুলত ৩ রকম থিংকিং বেইজড, একশন বেইজড, ব্যালেন্সড।

হ্যামিলনের বাঁশিওলা বিষয়ে একটা প্রশ্ন ছিল। আমার কাছে মনে হয় প্রত্যেকটা প্রাণী বা মানুষের আলাদা ফ্রিকুয়েন্সি আছে ব্যাক্তির বয়স পছন্দভেদে ফ্রিকোয়েন্সী গুলা আলাদা। হ্যামিলনের বাঁশিওলা সেই ফ্রিকোয়েন্সী গুলা জানে।

এই বইটাকে ওভার রেটেড করার পিছনে কারণ আমার ৩ বছরের থিংকিং ব্লক ছুটাতে যে ফেক্টর গুলা ছিল তার মধ্যে এই বই টাও একটা। আর ৭৭৭ এর জীবন কাহিনী আর বেড়ে উঠার সাথে আমার বেড়ে উঠার অনেক মিল। ঘনিষ্ঠ জনদের কাছে পাগল আর ঘারতেড়া তকমা জুটেছে বহু বার। কিন্তু জৈবিক প্রাণী হওয়ায় জাগতিক মোহ কাটাতে না পেরে এভারেজে মানুষ হওয়ার চেষ্টা চলছে। যার ফলশ্রুতিতে ৭ বছর ধরে মানসিক রোগী পরিচয়টা বহন করে চলছি। অর্থহীন জীবনে কিছুটা অর্থ এনে দেওয়ার জন্য৭৭৭ এর কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

  1. আর যদি ধৈর্য্য ধরে কেউ বইটার রিভিউ পড়ার জন্য হলেও যদি এত দূর এসে থাকেন তবে তার জন্য দুঃসংবাদ। আমি বইয়ের যে ১১% অথবা ১৭% বুঝেছি তার ১% অথবা ৩% প্রকাশ করতে পেরেছি। আগ্রহ তৈরী হলে পড়ে ফেলুন। চিন্তা জগতে সুন্দর একটা জার্নি হবে আশা করি।