হ্যাঁ, এটা একটা চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। তবে মূল প্রসঙ্গে যাওয়ার পূর্বে সাগর এবং পাপ্পু নামের দুজন তরুণের গল্প শোনানো উচিত।

ওদের কোম্পানীর নাম টেক কেয়ার; তবে এই নামটা ইংরেজিতে লেখার সময় কিছুটা বিভ্রান্তিতে ভুগি আমি। ওরা লেখে Tech Care, আমি ভাবি Take Care; বানানগত বিভ্রান্তি যতোই থাকুক, মূল থিমটা সেই ‘কেয়ার- শেয়ার-ফেয়ার’ ত্রিভুজেই চমৎকারভাবে ফিট করে যায়।

গল্পে ঢোকার পূর্বে ওদের কোম্পানীর ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজ এর ঠিকানা দিয়ে নিই, যাতে অতি উৎসাহীরা ঘাঁটাঘাঁটি করে নিতে পারেন।
ওয়েবসাইট: https://www.techcarebd.com/
ফেসবুক পেজ: https://www.facebook.com/techcarebd/

এবার তবে গল্পে-কল্পে সময়ূ কাটুক কিছুক্ষণ। সাগরের নাম প্রথম শুনি চমক ভাইয়ের মুখে, একজন অসাধারণ স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান হিসেবে। জসীম উদ্দিনের কবর কবিতাটা কতভাবে আবৃত্তি করা যায় এ সংক্রান্ত একটা ভিডিও ইউটিউবে এখনো পাওয়া যায় বোধহয়। আমি তখন অন্যরকম গ্রুপের ক্রিয়েটিভ কনসালটেন্ট ছিলাম, ফলে উদ্ভাসের সাথেও বিভিন্নসূত্রে কানেক্টেড ছিলাম। উদ্ভাসের ২০১১ সালের পিকনিকে যাই, সেখানে কালচারাল প্রোগ্রামে সাগরের পারফরম্যান্স দেখি। ‘মুন্নী বদনাম’ গানের তালে নাচতে নাচতে স্টেজের বাইরে থাকা বাঁশ বেয়ে উঠে নাচের তাল রাখা; যথেষ্ট ইমপ্রেসড হয়েছিলাম। জানতে পারি, সে রুয়েটে কম্পিউটার সাইন্সে ভর্তি হয়েছে।

সেই পারফরম্যান্সের বছর দুয়েক পরে রোযার ঈদের বন্ধে সে ঢাকায় আসে কয়েক সপ্তাহের জন্য। নিয়মিত অন্যরকম গ্রুপের কাওরানবাজার অফিসে আসতো সোহাগ ভাইয়ের কাছে; তার মিটিং থাকতো বলে আমার রুমে এসে কথা বলতো। তখনই শুনতে পাই, সে এবং তার আরেক বন্ধু পাপ্পু মিলে একটা উদ্যোগ নিয়েছে, যার মাধ্যমে রাজশাহীর বাসা-বাড়িতে টেকনিক্যাল সমস্যার সমাধান দেয়ার চেষ্টা করে। তার কিছুদিন পর কোনো একটা কম্পিটিশনে তারা পুরস্কার জিতে, পত্রিকায় নিউজ আসে।

ওর সাথে আলাপ থেকেই জানি, গ্রাজুয়েশন শেষে উদ্যোক্তা হবে। একটু ধাক্কা খাই। প্রোগ্রামার বা ডেভেলপার হিসেবে কেমন করবে নিশ্চিত না হলেও, ওর স্ট্যান্ড আপ কমেডি এবং তাৎক্ষণিক পারফরম্যান্সের যে প্রতিভা, এটা দিয়ে যে কোনো ভালো কোম্পানীতে বিজনেস ডেভেলপমেন্টে উচ্চ বেতনে চাকরি পাবে; সেই ছেলে উদ্যোক্তা হওয়ার কঠিন-কঠোর পথে নামতে চাইছে? এবং একা নয়, সাথে পাপ্পু নামের আরেক বন্ধুও আছে। সাহসি এবং দলছুট প্রকৃতির মানুষদের বরাবরই বিশেষ পছন্দ করি আমি। ফলে সাগরের সাথে ওর উদ্যোগভাবনা বিষয়ে প্রায়ই কথা হতো; বিশেষত অন্যরকম গ্রুপে আমি যেসমস্ত আনকনভেনশনাল এক্টিভিটি চালানোর চেষ্টা করতাম, কেবলমাত্র দর্শক হিসেবেই তার বেশ কয়েকটাতেই সাগর উপস্থিত থাকতো।

২০১৬ তে যখন প্রথমবার নিজের বিজনেস ফিলোসফি সংক্রান্ত কোম্পানী হিউম্যানল্যাব খোলার উদ্যোগ নিই, সাগর বলতে গেলে প্রায় বিনা খরচায় সেটার সাইট বানিয়ে দিতে সম্মত ছিলো, যদিও ওর নিজের কোম্পানীই তখন প্রচণ্ড ক্রাইসিসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলো। আমার খোশগল্প ডট কম নামের ওয়েবসাইটটা যারা দেখেছেন তাদের জ্ঞাতার্থে বলি, এই সাইটটাও ওদেরই ডেভেলপ করা।

গল্প দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে; এবার কুইক ফায়ারে যাই। এবছরের মাঝামাঝিতে যখন অন্যরকম গ্রুপ ছেড়ে বিজনেস ফিলোসফার ক্যারিয়ার এবং কোম্পানী খুলবার পরিকল্পনা করছি, তখন সাগরই ছিলো প্রথম মানুষ যে বলে, ভাই আমার কোম্পানীতে সপ্তাহে একদিন হলেও সময় দেন বিজনেস ফিলোসফার হিসেবে। ওর সাথে সম্পর্কের যে গভীরতা, বিকল্প ভাবনার সুযোগই ছিলো না।

দেখতে পাই, টেককেয়ার নিজেদের প্রজেক্টের পাশাপাশি একটা নতুন সার্ভিস চালু করেছে যার নাম Mobile Top Up; এমন একটা সার্ভিস যা যে কোনো মানুষেরই প্রয়োজন হয়। মোবাইল নেই এরকম মানুষ কজন আছে এখন!

এই এপস টা ডাউনলোড করে নিলে নিজেই নিজের ফোন রিচার্জ করা যায়। একই সার্ভিস অনেকেই দেয়, দিচ্ছে, কিন্তু সাগর আর পাপ্পু আছে বলেই বিশ্বাস করতে পারি, ওদের এমন কোনো ইউনিকনেস আছে যা অন্যদের থেকে ওদের সার্ভিসকে পৃথক করবে। এজন্যই তো টেক কেয়ারকে আমি লিখি Take Care !

ঠিক আছে, বহুল প্রতীক্ষিত চাকরির খবরে ঢুকে যাই সরাসরি। Mobile Top Up প্রোজেক্ট বা সার্ভিসের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টে ওরা একজন অপেক্ষাকৃত অভিজ্ঞ এবং বিজ্ঞ মানসিকতার মানুষ খুঁজছে। যেহেতু আমি ওদের কোম্পানীতে বিজনেস ফিলোসফি সার্ভিস দিই, আমি বোধ করলাম নিজের প্রোফাইল থেকে এই সংবাদটি সাজিয়ে-গুছিয়ে উপস্থাপন করি। Connecting People with proactive intent is the absolute reason I am living for.

বিজনেস ডেভেলপমেন্টে কাজ করা ব্যক্তির দায়িত্ব কী হতে পারে?
এর উত্তর তো সহজ। বিজনেস গ্রোথে কন্ট্রিবিউট করা। প্ল্যানিংয়ে তার দক্ষতা তেমন আবশ্যক না হলেও এক্সিকিউশন এবং ডিল ক্লোজিংয়ে উচ্চতর দক্ষতা অনিবার্য। মূলত Mobile Top Up এর জন্য কর্পোরেট অপরচুনিটি এক্সপ্লোর করা এবং কনভারসন রেট বৃদ্ধিতেই যাবতীয় মন-মনন বিনিয়োগ করতে হবে। এক বাক্যে বললে এটাই জব রেসপনসিবিলিটি; যোগ্য মানুষের জন্য এটুকুই যথেষ্ট; এমেচারদের জন্য লাগে একগাদা কাজের ফিরিস্তি! অভিজ্ঞ মানুষ যদি যোগ্যতাসম্পন্ন হয়, লেভেল অব এক্সিলেন্স কোথায় চলে যায়, তার দৃষ্টান্ত পৃথিবীর আনাচে-কানাচে অফুরন্ত।

এবার আসা যাক বেতনাদি প্রসঙ্গে।

যেহেতু যোগ্য এবং অপেক্ষাকৃত অভিজ্ঞ মানুষ খোঁজা হচ্ছে, তাদের আর্থিকভাবে মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও অকৃপণ হওয়া উচিত। তাই যোগ্যতার তারতম্য অনুসারে সম্মানির একটি রেঞ্জ রাখা হয়েছে।

আপাতত সেটা ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার পর্যন্ত বিবেচ্য;
তবে যোগ্যতাভেদে রেঞ্জে ফ্লেক্সিবিলিটি আসতেই পারে।

কী করতে হবে?
সিভি দেখতে বিরক্ত লাগে। তাই আগ্রহীদের জন্য মাত্র ৩টি প্রশ্নের উত্তর দেয়াই যথেষ্ট হবে:
.
1. আপনার ক্যারিয়ারের ৩টি সফল বিজনেস ডিলিংয়ের কেইস উল্লেখ করুন, এবং সেই ডিলগুলো কেন সফল হয়েছিলো মনে করেন তার যথাযথ কারণ লিখুন ।
.
2. আপনার ক্যারিয়ারের ২টি অসফল বিজনেস ডিলিংয়ের কেইস উল্লেখ করুন, এবং সেগুলো কেন অসফল হয়েছিলো মনে করছেন তার যথাযথ কারণ লিখুন।

3.আপনি নিজে মোবাইল রিচার্জ করেন কীভাবে, এবং মাসে গড়ে কতবার রিচার্জ করা হয়?

প্রশ্ন ৩টির উত্তর লিখে আপনার নাম ও ফোন নম্বরসহ ইমেইল করুন hello@techcarebd.com

আবেদনের শেষ সময় ১৯ শে সেপ্টেম্বর, রাত ১১টা ৪১মিনিট।

যোগ্য মানুষের যোগাযোগে যাপিত হোক চিন্তাচালনা। Take care!