আসন্ন রবিবারে ন্যূনতম ১১ জন অর্ধপরিচিত কিংবা অপরিচিত মানুষের সাথে গল্প করার নিয়ত করেছি। স্থান হিসেবে নির্বাচন করেছি শ্যামলি পার্ক, সময় বিকাল ৩ টা ৪৭ মিনিট।
অন্যরকম গ্রুপের ক্রিয়েটিভ কনসালটেন্ট ছিলাম যখন, ভার্সিটি পড়ুয়া প্রচুরসংখ্যক ইয়াং ট্যালেন্টদের সাথে সময় কাটানো হয়েছে। তাতে সেই সমস্ত ইয়াং ট্যালেন্টের কতটুকু উপকার হয়েছে বলা সম্ভব নয়, তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে সমৃদ্ধ হয়েছি। জায়েদ বিন সাত্তার, নাসিফ, বিত্ত, তালুকদার, রিফাত, শারিদ, সাফির আব্দুল্লাহ, প্রত্যয়, আলিফ, শুভ্র, জারিন, রিতুন, শাহেদ সহ আরো কত তরুণের চিন্তাধারার সাথে সংযোগ গড়ে উঠেছিলো।
অন্যরকম গ্রুপ ছাড়ার পর এই একটা জায়গায় বিরাট শূন্যতা বোধ করছি। মানুষই আমার বেঁচে থাকার অক্সিজেন। এখন আমার বেশির ভাগ দিন বাসায়ই কাটে। সোম, বুধ, বৃ্হস্পতি- এই ৩ দিন ৩ টি আলাদা কোম্পানিতে বিজনেস ফিলোসফার হিসেবে দুর্দান্ত কিছু মুহূর্ত কাটাই, বাকি ৪ দিন পুরো সময় বাসায় বসে বিবিধ বিষয়ে চিন্তাভাবনা, আর ৬ষ্ঠ বই লেখার প্রস্তুতি নিই।
আগামী সপ্তাহে একটা পাবলিকেশন্স এর ট্রেড লাইসেন্স নেয়ার ইচ্ছা। আমার পাবলিকেশন্স এ কখনোই প্রচলিত গল্প, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধের বই প্রকাশ করা হবে না। যে সমস্ত মানুষের থট প্রসেস আমার কাছে ভ্যালুয়েবল মনে হয় তাদের চিন্তাপ্রক্রিয়া আর্কাইভিংয়ের উদ্দেশ্যে তাদের দিয়ে বই লেখাবো। লেখার প্রতিভা হয়তোবা সবার নাও থাকতে পারে, সেক্ষত্রে ছায়া লেখক দিয়ে লেখাবো। ফুয়াদ ফিচারিং মিলা ধরনের। এছাড়া যে সমস্ত বিষয়ে থট প্রভোকিং উপাদান আছে সেধরনের বেশ কিছু ইংরেজি বইয়ের ছায়া অবলম্বনে বাংলা ভাষার উপযোগী করে বই করা হতে পারে। বইমেলা এলেই লেখকের বেশুমার প্রজনন নিয়ে, তাদের দৃষ্টিকটু মার্কেটিং নিয়ে ট্রল করি অনেকেই, কিন্তু এটার কাউন্টার রেসপন্স কী হতে পারে সে ব্যাপারে আন্তরিক পদক্ষেপ কতটুকু নেয়া হয়? পুশ সেল করে বইয়ের বিক্রি বাড়ে, পাঠক কি তৈরি হয়? আমার পাবলিকেশন্স উদ্যোগটা পুশ সেলিং কালচারের কাউন্টার রেসপন্স। এটা প্রফিটেবল করার চেষ্টা তো থাকবেই, তবে প্রফিটেবল কম হলে ভর্তুকি দিয়ে হলেও চালিয়ে নেয়ার ইচ্ছা, যতদিন কপর্দকশূন্য না হচ্ছি।
নভেম্বর পর্যন্ত বিজনেস ফিলোসফার ক্যারিয়ারের ফিজিবিলিটি টেস্ট করবো। আমার ধারণা ছিলো বাংলাদেশের বিজনেসে প্রসেস, সিস্টেম, ট্যালেন্ট নারচার, ইফিসিয়েন্সি বা ডিসিশন মেকিং বিষয়ে ইন্টেলেকচুয়াল সাপোর্টের কোনোই প্রয়োজন নেই, যদিও বাইরের দেশগুলোতে বিজনেস ফিলোসফার খুবই এক্সপেনসিভ একটি পেশা। তবে অন্যরকম গ্রুপ থেকে বের হবার পর আবিষ্কার করলাম স্টার্ট আপ এবং মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজগুলোতে প্রচুর স্মার্ট এবং ইনোভেটিভ থিংকিংয়ের মানুষ রয়েছে, যে কারণে বাংলাদেশেও BCG, McKinsey আদলের কোম্পানী হয়তোবা খোলা সম্ভব। দেখা যাক।
২০১৬ তেই হিউম্যান ল্যাব নামে আমি একটা বিজনেস রিসার্স কোম্পানী খুলেছিলাম। কিন্তু যথেষ্ট চিন্তাশীল মানুষের অভাবে কোম্পানীটি এগিয়ে নিতে পারিনি। আমিই সব করবো এটা দোকানদারি, বিজনেস মাইন্ডসেট নয়। সর্বেশেষ ২ বছরে প্রচুরসংখ্যক মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে, প্রোবাবিলিটি সূত্রানুসারে চিন্তাশীল মানুষ পাওয়ার সুযোগও বাড়ার কথা। দেখা যাক, নভেম্বর পর্যন্ত ফিজিবিলিটি পরীক্ষা করি আগে।
মানুষের সাথে সময় কাটানো আমার সবচাইতে পছন্দের কাজ। জীবনে যত বই পড়েছি ৮৯% ই শেষ করার আগ্রহ বোধ করিনি, লেখকের রিফ্লেক্টিভ আর রিপ্রোডাক্টিভ লিনিয়ার চিন্তাপ্রক্রিয়ায় বিরক্ত হয়েছি। মানুষের সাথে কথা বলেই প্রতিনিয়ত শিখেছি, শিখছি। এখন যেহেতু সপ্তাহে ৪ দিনই বাসায় থাকি, ইয়াং ট্যালেন্ট বা মননশীল মানুষদের সাথে আরো বেশি সময় কাটাতে চাই।
রবিবারে যারা আসতে চান, ইনবক্সে আসার ২ টি কারণ লিখে যোগাযোগ করাই যথেষ্ট হবে। আসবো বলে না আসাটা কমিটমেন্ট ভঙ্গ হবে। কমিটমেন্টের যত্ন নিন।