বিভিন্ন সময়ে যে সমস্ত লেখকের চিন্তাপ্রক্রিয়ার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি তাদের মধ্যে থেকে পছন্দের একাদশ
১. রনে দেকার্ত: চিন্তাপদ্ধতি বিষয়ে তার খুবই চমৎকার একটি বই পড়েছিলাম। নামটি স্মরণে আসছে না।
২. ফ্রেডরিখ নীটশে: ‘জরাথ্রুস্ট বললেন’ চিন্তাকে নাড়া দেয়া শক্তিশালী বই।
৩. আলবেয়ার ক্যামু:. মিথ অব সিসিফাস এবং দ্য আউটসাইডার– দুটোই ভাবিয়েছিল
৪. জেমস জয়েস: যেখানে যা গল্প পাই পড়ার চেষ্টা করি।
৫. হারমান হেস: সিদ্ধার্থ বইটা ভুলতে পারি না। আরেকটা বই আছে, অনুবাদ শুরু করেছিলাম; bread game: magister ludi বা কাছাকাছি নাম
৬. এডগার এলান পো: কালো বিড়াল গল্পটা মাথায় ঘোরে এখনো। নিজে পো এর দুটো গল্প তরুণ বয়সে অনুবাদও করেছিলাম।
৭. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়: গল্প না টানলেও উপন্যাসগুলো দারুণভাবে ভাবিয়েছে বিভিন্ন সময়ে
৮. আর্নেস্ট হেমিংওয়ে: তার গল্পগুলোর সিগনেচার দারুণ
৯. ফ্রানজ কাফকা: ট্রায়াল যতবার পড়ি প্রশ্ন জাগে নিজে এরকম একটা কিছু লিখি না কেন।
১০. জ্যাক রুশো: দ্য কনফেশন এবং সোস্যাল কনট্রাক্ট পড়ে তার ব্যক্তিত্বের প্রতি প্রবল আগ্রহ জন্মেছিল।
১১. জুলভার্ন: তার কল্পনাশক্তি অবিশ্বাস্য
বিশেষ মেনশন: জ্যাক লন্ডন, আন্তন চেখভ, এইচ জি ওয়েলস, রাহুল সাংকৃত্যায়ন, বারর্ট্রান্ড রাসেল, জর্জ অরওয়েল
এবার অপছন্দের একাদশ। যাদের লেখা পড়া হয়েছে কিন্তু আগ্রহ দূরের কথা, উপরন্তু প্রচণ্ড বিরক্ত বোধ করেছি
১. গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ: ম্যাজিক রিয়েলিজম থিম বাংলাদেশে তার কারণেই সম্ভবত জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ম্যাজিক রিয়েলিজম আমার নিজেরও প্রচণ্ড আগ্রহের, কিন্তু তার কনসেপ্টগুলো আকর্ষণ করে না।
২. উইলিয়াম শেক্সপিয়ার: সেই সময়ের জন্য হয়তো স্টোরিলাইন উপযুক্ত ছিল, কিন্তু তার লেখাগুলো সিনেমাটিক মনে হয় অতিমাত্রায়
৩. বিভূতিভূষণ: অতিমাত্রায় বর্ণনাপ্রবণ৷ বর্ণনার ভারে কল্পনায় ব্যাঘাত ঘটে, মনে হয় চোখের সামনে ভিডিও দেখছি। তবে তার ‘দেবযান’ বইয়ের থিম শুনে আগ্রহ তৈরি হয়েছে, পড়তে হবে। তখন লিস্ট থেকে বাদ যেতে পারে, কিংবা উপরেও উঠতে পারে। তার আগ পর্যন্ত অনাগ্রহের জায়গাতেই রাখবো
৪. মিলান কুন্ডেরা: আনবিয়ারেবল লাইটনেস এর প্রথম বাংলা অনুবাদ সম্ভবত আমার করা৷ বইটা পড়ে অতি ভালো লাগার বশে তার সবগুলো উপন্যাসই পড়ি, এবং আবিষ্কার করি তার বক্তব্য একটা জায়গায় আটকে আছে, আর বিকশিত হচ্ছে না। যে কারণে চরম বিরক্তি তৈরি হয়।
৫. সমরেশ মজুমদার: তার এত জনপ্রিয়তা কীভাবে হলো, ভাবা যেতে পারে। যতবারই পড়ি বিজ্ঞাপন মনে হয়
৬. হাসান আজিজুল হক: ‘নাহ, ঠিক জমলো না’— তার বই পড়ে এটাই মনে হয় বারবার।
৭. ড্যান ব্রাউন: বিশুদ্ধ পপুলিস্ট
৮. ডেল কার্নেগি: মোটিভেশনাল স্পিচ গোষ্ঠীর আদি পুরুষ
৯. শরতচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়: বাংলা ভাষার পড়ুয়াদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ যে ভাবনাজাগানিয়া কিছু পড়তে আগ্রহ পায় না তার দায় এই ভদ্রলোক কীভাবে এড়াবেন?
১০. ভিএস নাইপল: জোর করে লেখেন মনে হয়েছে।
১১. অরুন্ধতি রায়: চর্বিত চর্বন
বিশেষ মেনশন: বুদ্ধদেব গুহ, সমরেশ বসু, জর্জ বার্নার্ডশো
এর বাইরেও ১১ জনের তালিকা যাদের চিন্তা কখনো আগ্রহ জাগায় কখনো বিরক্ত লাগে; অর্থাৎ তাদের প্রতি ইমপ্রেসন স্থির করতে পারি না। এরাই আদতে সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেখান থেকে বাছাই করাটা ভীষণ দুরূহ
১. লিও টলস্টয়: কংক্রিট রিয়েলিস্ট ধরনের সাহিত্য
২. সৈয়দ মুজতবা আলি: হিউমার থাকলেও চিন্তা কম পাই
৩. সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়: অমৃত-গরল একই পাত্রে ধারণ করেন
৪. বুদ্ধদেব বসু: প্রবন্ধ টানলেও গল্প-উপন্যাস গড়পড়তা
৫.রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর:গল্প আর প্রবন্ধ টানে, উপন্যাস বেশিরভাগই একরৈখিক লাগে; কারো কবিতাই পড়িনি জীবনে, তারটাও। গানের হিসাব এখানে আনতে চাই না
৬. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়: প্লটগুলো আকর্ষণীয় হলেও লেখক হিসেবে প্রচণ্ড কনফিউজড মনে হয়েছে।
৭. ইয়স্তেন গার্ডার: সলিটায়ার মিস্ট্রি আকর্ষণ করেছিল। সোফির জগত, থ্রু এ গ্লাস ডার্কলি তে আর আগ্রহ আসেনি
৮. শিবরাম:যদিও সে হিউমারের জন্য পরিচিত, আমি খুব বেশি হিউমার আবিষ্কার করতে পারিনি
৯. দস্তয়ভস্কি- নোটস ফ্রম দ্য আন্ডারগ্রাউন্ড আর জুয়ারি আকর্ষণ করেছিল, অন্য যা পড়েছি রিয়েলিস্ট আর রিফ্লেক্টিভ লাগে।
১০. ও’ হেনরি: চমক জিনিসটার মিসইউজের জন্য এই লোকের কিছুটা দায় থাকা উচিত বোধ করছি
১১. শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়: পপুলিস্ট সাহিত্যের মধ্যেও ভাবনার উপকরণ পাই অনেকগুলোতেই