সলিড দশ ঘন্টা ধরে একটা বই পড়েছি। যদি জিজ্ঞেস করো, কোন বই? –নাম বলা যাবে না। কারণ এই বইয়ের কোন নাম নাই!
নাম নাই!!! তাহলে কেন এই বই পড়তে গেলাম?
কারণ চিন্তাশীল এবং একটু উদ্ভট এক্সপেরিমেন্টকারী একজনের থট প্রসেস নিয়ে আমার আগ্রহ ছিল। সেজন্যই জীবনে এই প্রথম, ডিকশনারি ছাড়া ৬১৯ পৃষ্ঠার কোন বই ধরার সাহস করেছি।
এই বইটাকে নির্মম বাস্তবতার সামনে অসহায় সম্পর্ক, ভঙ্গুর ফ্যামিলির যুদ্ধ, বা কর্পোরেট জবে সিস্টেমেটিক চেইঞ্জের চ্যালেঞ্জের বই বলা যায়। আবার সংখ্যার অবসেশন নিয়ে কল্পনাবিলাস বা প্যারালাল ইউনিভার্সের বইও বলা যায়। এমনকি হিউম্যান রিসোর্সের এক্সপেরিমেন্ট এবং পার্সপেক্টিভ ডেভেলপমেন্টের সাময়িক পরাজয় মেনে না নিয়ে সাহসিক ড্রাইভ দেয়ার বইও বলা যায়। তবে যে বই-ই বলা হোক না কেন। আমার কাছে এটা হিমালয় পাই এর হিমালয় হয়ে উঠার গল্প।
হিমালয়ের ক্লোজ অবজারভেশন, মানুষের ট্রেন্ড ধরে বোল্ড প্রেডিকশন, বা ভিন্ন পার্সপেক্টিভ দিয়ে প্রসেস ডেভেলপমেন্ট করে সেটার এক্সপেরিমেন্ট করার চাইতেও আমাকে বিস্মিত করেছে তার শৈশবের চ্যালেঞ্জগুলো, অল্প বয়সের মেচিউর কাজগুলো, এবং নিজের ও সবচেয়ে আপন মানুষদের থিংকিং/কাজ কর্মের স্টাইলকে সরাসরি প্রশ্নবিদ্ধ করার সাহস দেখে। কয়েকটা জায়গায় হিউম্যান সাইকোলজি আরেকটু ডেপথ এ গেলে, সিচুয়েশন ব্যাখ্যা করতে পরিচিত চরিত্রগুলো গল্পের বাইরে রাখতে পারলে বা শুরুর দিকে সংখ্যার মারপ্যাঁচ কম হলে আমার মতো দুর্বল পাঠকের পড়তে হালকা আরাম হতো। তবে শেষের দিকের চ্যাপ্টারগুলো দারুণ লেগেছে।
হিমালয় সাহসিক এক্সপেরিমেন্ট উপভোগ করে। তাই তার এই ৬১৯ পৃষ্ঠার বইয়ের কোন নাম নেই। আবার কোন দামও নাই। যার যত ইচ্ছা তত টাকা দিয়ে কিনতে পারে। কোন সর্বোচ্চ বা সর্বনিম্ন দাম নেই। আবার এই বই যেকেউ কিনতেও পারবে না। কেন এই বই পড়তে চায়, সেটা জানিয়ে তাকে ইমেইল করতে হবে (himalay777@gmail.com)। সেই ইমেইল যথাযোগ্য মনে হলেই সে বই পাবে। এই এক্সপেরিমেন্টটাকেই– বোল্ড, ডিফারেন্ট আবার পাগলামিও বলা যায়। এইটাই আমার কাছে এই বইয়ে বৈশিষ্ট্য। এইটাই আমার কাছে হিমালয়ের বৈশিষ্ট্য।
বইয়ের শেষ লাইন- ‘ xxxxx, মনোযোগ ঠিক রাখিস কিন্তু …’