ধরেন, আপনি যাই বলেন আর যাই করেন, আমি তো ভাই বুঝছি আপনার উদ্দেশ্য-বিধেয় কি। আমার বুঝ তো ভাই আমার কাছে নাকি?
আমি হতে পারি নদীর এপারের মানুষ, তাই বলে নদীর ঐপারে কি হয়-কেন হয়-কার জন্য-কিভাবে হয় সব বুঝ তো আমার আছে, তাই না? কারণ আমি ওখানে না থাকলেও ওখানকার বহু মানুষের সাথে তো আমার যোগাযোগ আছে, কথা হয়, দেখা হয়, তারে-বেতারে শব্দ-ধ্বনি’র আদান-প্রদান তো হয়।
এমনই এক কন্সেপ্টের প্র্যাক্টিস বর্তমান সময়ে আমরা করছি সারাক্ষণ। আপনি যে ইন্টেশনেই কোনো কাজ করেন না কেন বা কিছু সময় কোনো ইন্টেনশন ছাড়াই কিছু করেন বা বলেন না কেন, সেটা থেকে ‘প্রকৃত’(!) অর্থ নিজের মত করে ইন্টারপ্রেট করার জন্য সদা প্রস্তুত আপনার চারপাশের সবাই; সবাই মানে সবাই!
তবে বেঁচে থাকতে হলে যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতেই হবে, ঠিক তেমনই ‘মানুষ’-এর সাথেও ডিল করতেই হবে। আর মানুষ ডিল করার মত চ্যালেঞ্জিং+এক্সাইটিং কাজ দুনিয়াতে আর সম্ভবত নেই। এই চ্যালেঞ্জ ওয়ার্মলি নিতে পারলে পুরো জীবনটাই এক্সাইটিং এক রোলার কোস্টার রাইড হতে পারে।
আর মানুষ চেনা কিন্তু সহজ কাজ না!
.
উপরের এই লাইনগুলো একটা বইয়ের ব্যাপারে (আমার ব্যক্তিগত) রিভিউ/জিস্ট/ফিডব্যাক। বইটা সাইজে বেশ বড়, ৬১৯ পৃষ্টা। প্রায় বছর খানেক সময় নিয়ে লিখেছেন Himalay ভাই। অনেকের ভাষ্যমতে এটা তাঁর বায়োফিকশন, তাঁর ভাষ্যমতে হিউম্যান বিহেভিয়ার নিয়ে কৌতূহলী ও বিশ্লেষণী ক্ষমতার অধিকারী যেকোনো মানুষের জন্য একখানা চিন্তার খোরাক।
কোনো নাম না থাকলেও বা নাম না থাকার কারণেই দুই মাস আগে প্রকাশিত এই বইয়ের বর্তমানে ‘নামহীন’ বই নামেই অনেকের কাছে পরিচিত হয়ে গেছে। আর দামের ব্যাপারটাও সুনির্দিষ্ট না, আপনি পড়তে চাইলে ইমেইল করবেন, জানাবেন কেন পড়তে চান এবং আপনি কতটাকা এই বইয়ের জন্য দিতে চান, পৌছে যাবে আপনার কাছে বইখানা।
.
বইটা পড়ার পর অনেকের অনেক মতামত! (তাই তো হবার কথা)
এই ভাষা না ব্যবহার করলেও হত, সেই ঘটনা না উল্লেখ করলেও হত, আরো নানান ইস্যু/আবদার। আমার কথা হল, লেখক যা বলতে চাই সেটা বুঝানোর জন্য যা দরকার মনে করেছে লিখেছে এখন আপনার বুঝ আপনার কাছে। আগেই তো বলেছি আমাদের সবার রেডিমেড বুঝ তো ভাই আছেই, লেখকও অবশ্য এর আওতার বাইরে না। আর একজন লেখক তো তাঁর চলার পথকে আশ্রয় করে নিজের চিন্তাভাবনা ব্যাখ্যা করতে গেলে তাঁর সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো চলে আসবেই সেটাই তো স্বাভাবিক, তাই না? সেটা টক-মিষ্টি-তেতো-নোনতা স্বাদ লাগবে, এতে অবাক হবার তো কিছু নেই। সে তাঁর বুঝ বুঝছে, আসেন আপনি-আমি আমাদেরটা বুঝি!
.
আমার একটা স্বভাব আছে যে বই পড়ার সময় তাতে যেসব ক্যারেক্টারগুলো বারবার আসে তাঁদের কাস্টিং করে ফেলি; যেমন এই বইতে স্বয়ং হিমালয় ভাইয়ের ক্যারেক্টারেই কাস্ট করেছি গৌতম ঘোষকে। হিমালয় ভাই কাস্টিং-এর এই ব্যাপারটা জানার পরে উল্লেখযোগ্য ক্যারেক্টারগুলোর কাস্টিং করার জন্য তাগিদ দিতে থাকে, এমনকি কি বেশ কিছু কাস্টিং-এ তাঁর সারাসরি হস্তক্ষেপও ছিল। যারা ক্যারেক্টারগুলোর সাথে পরিচিত তাঁদের বিষয়টা রিলেট করতে সহজ হবে, অন্যদের ক্ষেত্রে বই পড়েই রিলেট করতে হবে। এখানে বলে রাখা ভাল যে, কাস্টিং যাদের করা হয়েছে তাঁদের সাথে ক্যারেক্টারগুলোর এজ ডিফারেন্স থাকতে পারে, যারা ক্যারেকটারগুলোকে চেনেন তাঁরা এটা এডজাস্ট করে নিয়েন।
হিমালয় ভাই –গৌতম ঘোষ
হিমালয় ভাইয়ের বাবা – হুমায়ুন ফরিদী
হিমালয় ভাইয়ের মা – ডলি জহুর
হিমালয় ভাইয়ের বড় আপা – ববিতা
হিমালয় ভাইয়ের বড় দুলাভাই – নাদের চৌধুরী
হিমালয় ভাইয়ের ছোট ভাই – ইরেশ যাকের/জাহিদ হাসান (বিটিভি আমলের)
হিমালয় ভাইয়ের ছোট আপা – নুসরাত ইমরোজ তিসা
হিমালয় ভাইয়ের ছোট দুলাভাই – আহমেদ রুবেল
৩১৭৯ – অপি করিম
১১৫৭ – রওনক হাসান
41 – জয়া আহসান
ফারহানা ব্রতী – শম্পা রেজা/অপর্না সেন
পাপড়ি আপু – তনিমা হামিদ
মাইকেল মধুসূদন – তারিক আনাম খান
আরমান ভাই – যীশু সেন গুপ্ত
সোহাগ ভাই – পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়
লুলু পাগলা – আজাদ আবুল কালাম
চমক হাসান – অনুপম রায়
আরিফা আপু – বিপাশা হায়াৎ
সনেট বোরো – ইফতেখার আহমেদ ফাহমি
সাজিআপা – সাবেরি আলম
সঞ্চিতা দে – সহিনী সরকার
বৃষ্টির দিনে ছাতাধরা মেয়েটা – মিমি চক্রবর্তী
ওমর বহ্নি – সোমলতা
হাসান মাহবুব – কচি খন্দকার
প্রোমা – পায়েল সরকার
এখনে প্রায় আরো কয়েক’শ ক্যারেক্টার কাস্টিং করা যেতো, কিন্তু এতো টাকা তো প্রডিউসার দিবে না!
(এখানে বাদ পড়ে যাওয়া বইয়ের কোনো ক্যারেক্টারের কাস্টিং জানতে আগ্রহী হলে ইনবক্সে জানিয়েন)