জনরাভিত্তিক ফিল্মের মেকিং, লুক এন্ড ফিল সবকিছুতেই সিগনিফিক্যান্ট পরিবর্তন এসেছে। টেকনোলজির অগ্রগতিই এক্ষেত্রে প্রধানতম নিয়ামক। তবে শংকার বা অস্বস্তির বিষয় হলো প্রেজেন্টেশনে স্মার্টনেস বাড়ার সাথে সাথে আনুপাতিক হারে স্ক্রিপ্টিং বা স্ক্রিনপ্লে তে গ্রোথ হচ্ছে না৷ স্টোরিটেলাররা আটকে পড়েছে একটি ফরমুলাবদ্ধ লুপে, ক্রমাগত চলছে তার পুনরাৎপাদন।
ফিল্মের চাইতে আরো স্পেসিফিকভাবে যদি ওয়েবসিরিজ প্রসঙ্গে বলি?
এই ধারার কনটেন্টের ট্রেন্ড খুব বেশিদিনের নয়। কিন্তু অদ্যাবধি ক্রাইম থ্রিলার আর আনঅথোরাইজড সেক্স— এই দুই অঞ্চলের বাইরে ওয়েবসিরিজ পাওয়া গেলে সে এক বিরল ব্যতিক্রম। মার্কেটেও এই দুই ঘরানার চাহিদা তুঙ্গে, তাই খুবই সম্ভাবনা আছে এভাবে চলতে থাকলে ৫ বছরের মধ্যেই প্যাশনেট নির্মাতারা অরুচিতে ভুগতে ভুগতে অন্য কোনোকিছুতে যুক্ত হবেন।
ক্রাইম থ্রিলার ছক এতটাই প্রেডিক্টেবল যে স্ক্রিপ্ট রাইটারের প্রতি সিমপ্যাথি এবং ইমপ্যাথি বোধ করতে থাকি। ‘জীবন থেকে নেয়া’ ফিল্মে খান আতাউর রহমানকে একটি গান গাইতে দেখা যায় ‘এ খাঁচা ভাঙবো আমি কেমন করে’; ক্রাইম থ্রিলারের স্ক্রিপ্টরাইটারদের মানসিক অবস্থাকে অবিকল এই গানটা দিয়ে অনুধাবন করা যায়। তারা চায়, কিন্তু পেরে উঠে না। সেই চেনা প্যাটার্ন, সেইসব মুখস্থ টুইস্ট, ক্লাইম্যাক্স—- দর্শকমাত্রই জানে, তবু তারা জি-বাংলা বা স্টার জলসার সিরিয়ালগুলোর ভোক্তার মতো নেশায় পড়ে যায়।
তবে এর মধ্যেও কতিপয় স্টোরিটেলার আবির্ভূত হয় মার্কেটে যারা ইমপ্রোভাইজ, জোড়াতালি এবং সংকরায়ণে বিশেষ দক্ষ। বাংলা–সমাজ-পদার্থ বিজ্ঞান-রসায়ন-গণিত-নীতিশাস্ত্র-অর্থনীতি-ভূগোল, সব বিষয়ের কিছু কিছু অংশ নিয়ে তারা একটা নতুন সাবজেক্ট তৈরি করতে পরিকর হন। কিন্তু এত সাবজেক্টের জিন বহন করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র কোনো সাবজেক্টই খুঁজে পাওয়া যায় না।
কাইজার নামের ওয়েবসিরিজটির স্ক্রিপ্ট যে লিখেছে সেও নিশ্চয়ই এরকম পরিস্থিতির মুখেই পড়েছে।
জার্মান ফুটবল কিংবদন্তী ফ্রাঞ্জ বেকেনবাউয়ারকে কাইজার নামে ডাকা হত। তাই বাঙালি কোনো পুরুষের নাম কাইজার শোনামাত্র আমার প্রথম ইমপ্রেসন আসে তার পরিবারের প্রভাবশালী কোনো সদস্য জার্মানির সমর্থক।
৯০ দশকের শিশু-কিশোরদের বৃহৎ অংশেরই বই পড়ার হাতেখড়ি তিন গোয়েন্দা আর মাসুদ রানার মাধ্যমে।
কাইজার এর স্ক্রিপ্ট রাইটার একজন নিখাদ তিন গোয়েন্দা পাঠক, এবং প্রজেক্টটাকে বলা যেতে পারে তিন গোয়েন্দার প্রতি ট্রিবিউট।
কাইজারের সেটিংস যদি খুব নিবিড়ভাবে ব্যবচ্ছেদ করা হয় তবে এটি আধুনিক তিন গোয়েন্দা সংস্করণ; অন্যান্য চরিত্র, প্রতিবেশ, প্লট বা সাবপ্লট যা এসেছে সবটাই সমকালীন ক্যানভাসটাকে কানেক্ট করতে।
কাইজার, অম্লান আর তন্ময় ছাড়া সকল ক্যারেক্টারই এসেছে সেটিংসকে কো-অপারেট অথবা কনফ্লিক্ট করতে।
তবু সিরিজের নাম কাইজার, কারণ , থ্রি মাস্কেটিয়ারস, তারা ৩ জন, থ্রি ইডিয়ট সহ থ্রি এর এত ব্যবহার যে নতুন করে তিন এর জন্য কোনো বরাদ্দ নেই।
অন্যদিকে শার্লক হোমস, জেমস বন্ড, ফেলুদা, বোমক্যেশ, কাকাবাবু প্রভৃতি নামগুলো একজন সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিকে ইঙ্গিত করে। এই স্টাইলটা মার্কেট সহজে গ্রহণ করে।
স্ক্রিপ্ট রাইটার এর পছন্দের খাবার সম্ভবত খিচুরি। তাই এক মলাটে তিনি কতকিছুকে মিশিয়েছেন মশলা বানাতে-
* কাইজার দেখা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনি চোখের সামনে হাঁটতে দেখবেন সৃজিত মুখার্জির বাইশে শ্রাবণ ফিল্মের প্রসেনজিত চ্যাটার্জিকে। সোস্যাল উইথড্রন, নেশার জগতে ডুবে থাকে। কিছুক্ষণ পর আপনার সামনে হাজির হবে হালের ক্রেজ ‘একেন বাবু’; সারাক্ষণ ননসেন্স কথা-বার্তা, আচরণে নেই শার্পনেস, ক্যাবলাকান্ত গোছের, অথচ সে নাকি গোয়েন্দা। এর সঙ্গে মনে করতে চেষ্টা করুন শার্লক হোমসের মাদকাসক্তি। কিংবা কলকাতা বাংলা সিনেমা ‘ওয়ান্টেড’ এ শরদ কাপুরের করা গোয়েন্দা চরিত্রটি যে ছিল প্লেবয় প্রকৃতির। কাইজারের ভিডিও গেম আসক্তিকে এই কাতারে ফেলা যায়। কাইজার চরিত্রটিকে তাই চেনা চেনা মনে হবে, কিন্তু হুবুহু কারো সাথে মিলছে না। এখানেই জোড়াতালির সার্থকতা৷
* বাইশে শ্রাবণ এ রাইমা সেন ক্যারেক্টারটা মনে পড়ে? পরমব্রত এর সাথে লিভিং রিলেশন, আবার আবীর চ্যাটার্জি ছোটবেলার বন্ধু। এই থিমটাকে একটু পরিমার্জিত আঙ্গিকে বাংলাদেশের উপযোগী করলে দাঁড়ায় বেস্ট ফ্রেন্ড এর স্ত্রীকে বিয়ে করেছে অন্য ফ্রেন্ড।
* স্ক্রিপ্ট রাইটারের হঠাৎ মনে হলো কেবল ক্রাইম থ্রিলার যথেষ্ট নয়, এর সাথে পোস্ট মডার্ন ফ্লেভার যুক্ত করা উচিত। যে কারণে আপনি পেয়ে যাবেন LGBT ইস্যু। বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ির পরে মা বিয়ে করেছে বাবার বাল্যবন্ধুকে। ফলে বাবা ঠিকই বাবা রয়ে গেল, অম্লান কাকু হলো আব্বু। আবার এত তিক্ততা নিয়ে ডিভোর্স হওয়ার পর প্রাক্তন স্ত্রী এখনো ভালোবাসে কাইজারকে, তার গেমিং পার্টনারের ডাক্তার বোন যার একমাত্র কাজ ভাই কেন মেডিকেল ফাঁকি দিয়ে কাইজারের সাথে ভিডিও গেম খেলে বেড়ায় এ নিয়ে বাগযুদ্ধে জড়ানো, সেও কাইজারের সাথে প্রেমময় সংলাপ আউড়ায়। কাইজারকে রমণীমোহন বানিয়ে স্ক্রিপ্ট রাইটার মাসুদ রানা ফ্লেভারটাও জারি রাখে।
* ক্রাইম থ্রিলারের প্যাটার্ন অনুসারে বুদ্ধিদীপ্ত চেহারার এবং আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গির ব্যারিস্টারকে স্ক্রিনে দেখামাত্র যে কোনো থ্রিলার পাঠক বুঝবার কথা ইনিই স্টোরিলাইনের এন্টাগনিস্ট। কিন্তু তার কাছে পৌঁছানোর পুর্বে একটা প্রেডিক্টেবল টুইস্ট বা এন্টিক্লাইম্যাক্স থাকা উচিত। সেক্ষেত্রে সম্ভাব্য ডার্ক ক্যারেক্টার তালিকায় ছিল গেমিং পার্টনার অন্তু, বেস্ট ফ্রেন্ড অম্লান অথবা নারী ডিটেক্টিভ মুনিয়া, এমনকি কাইজার স্বয়ং। যেহেতু এটা তিন গোয়েন্দার রেনোভেশন, সঙ্গতকারণেই অম্লান বা কাইজারের ইউটার্ন নেয়ার সম্ভাবনা খারিজ হয়ে যায়। অন্তু আর মুনিয়ার মধ্যে ২য় জন হয়ত গল্পের প্রোগ্রেসে অধিকতর তাৎপর্য বহন করে। কারণ থ্রিলার সেট আপ এ ডাবল এজেন্ট অতি ক্লিশে টুইস্ট। তবে ব্যারিস্টার ক্যারেক্টারকে যেভাবে পোরট্রে করা হয়েছে, বিপরীতে তার মার্ডার প্লট এর বাস্তবায়ন খুবই এমেচার ধরনের হয়ে গেল। স্ক্রিপ্ট রাইটার সম্ভবত শেষ এপিসোডে অনেক বেশি ক্লাইমেক্স বা টুইস্ট জমা রাখতে গিয়ে সময় সংকটে পড়েছিলেন, যে কারণে কাটছাট করার প্রক্রিয়ায় ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলেছেন।
কাইজার তবু দেখতে ভালো লাগে বা চানাচুরের মতো খেয়ে নেয়া যায়; কেন?
প্রধান কারণ, এর উইটি এবং হিউমারাস সংলাপ। বাংলাদেশের কোনো স্ক্রিপ্ট রাইটারের থেকে এরকম সংলাপ তৈরি সম্ভব, ব্যাপারটা রীতিমত অকল্পনীয় আমার জন্য।
দুটো সংলাপ মনে পড়ছে এই মুহূর্তে
-কাইজারের সাথে ঝগড়া করে অম্লান তার স্ত্রীকে নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে তন্ময়ের বাসা থেকে। কাইজার বলছে- ‘সাবধানে যাইস, নইলে কোন বন্ধুর বউরে লাগাইয়া দিতে পারস’। ভয়াবহ অশালীন একটা কথা, অথচ শুনে বোঝাই যায় না যদি দুজনের মধ্যকার কনটেক্সট না জানা থাকে।
– শেষ এপিসোডে কাইজার তার অধস্তন কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ দিচ্ছে জীবন বাঁচানোর জন্য, সে বলছে স্যার আমি তো আপনারে বাঁচাই নাই, আমার চাকরি বাঁচাইছেন। কাইজার বলে- মজিদ আপনি কিন্তু জাউড়া আছেন। মজিদ বলে- একটু একটু
স্রেফ সংলাপের আকর্ষণেই তালতলাহীন একটা স্ক্রিপ্ট মার্কেটে চলবে? সম্ভবত না।
তাহলে উপায়?
এটাকে গ্ল্যামারাইজ করতে মার্কেট চলতি কাউকে কাস্ট করে নাও।
কে হতে পারে সে?
মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরি। অন্যথায় শ্যামল মওলা, আফরান নিশো অথবা অপূর্ব।
এরা সংলাপ ছাড়বে, কয়েকটা যদি ভাইরাল হয়ে যায় সিরিজ এর রেটিং নিয়ে চিন্তামুক্ত থাকা যাবে। প্রত্যেকের আছে নিজস্ব ফ্যানবেইজ, তারাই প্রমোট করবে।
সেই ফরমুলা মেনে লিড রোল এ আফরান নিশো। আমি কোনো অভিনয় ক্রিটিক নই। তাই কে কেমন অভিনয় করেছে এ জাতীয় আলাপ এড়িয়ে চলি, যদিও যে কোনো ফিল্ম সংক্রান্ত লেখায় একটা টোন খুবই কমন- ‘অমুক অভিনেতা দুর্দান্ত ছিলেন, নিজের জাত চিনিয়েছেন’।
এধরনের স্টেটমেন্টকে অন্তঃসারশূন্য লাগে। অভিনয়ের আগে বোঝা দরকার ক্যারেক্টারাইজেশন৷ মানে স্ক্রিনে সেই ক্যারেক্টারটির স্কোপ বা ক্যাপাসিটি কতটুকু ছিল। সেই স্কোপ অনুসারে চঞ্চল চৌধুরি যতটুকু ডেলিভার করলো, তার পরিবর্তে শ্যামল মওলাকে নিলে কি ডেলিভারিতে প্রচুর তারতম্য ঘটতো। এজন্যই আমি অভিনেতা নয় ক্যারেক্টারের ডেপথ বোঝার চেষ্টা করি, এবং সেই ডেপথ এ কেউ ফিট করেছে কিনা ফিল করি। এটা হয়তবা গ্রামারটিকাল কোনো পদ্ধতি নয়, কিন্তু আমার স্কেলিং এপ্রোচ এটাই।
আফরান নিশোকে বাদ দিলে কাইজার এ হাইপ্রোফাইল কাস্টিং শুধু শতাব্দি ওয়াদুদ। তার স্ক্রিন টাইম সামান্য। লম্পট হিসেবে সে উত্তীর্ণ। আরেকজন হাইপ্রোফাইল কাস্টিং আহমেদ রুবেল, কিন্তু প্রথম সিজনে সে গিমিক ক্যারেক্টার। এর বাইরের কাস্টিংগুলো প্রায় সবই রাইজিং অথবা সেমি-রাইজিং ক্যাটেগরিতে৷ বাজেট একটা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। লিড রোল এর কাস্টিংয়ে যা খরচ হয় সেটার সাথে প্রোডাকশন খরচ যোগ করলে যা বাকি থাকে তারপরে মিড লেভেল কাস্টিং ছাড়া উপায়ও থাকে না। তার প্রভাব পড়ে স্টোরিটেলিংয়ে; কারণে-অকারণে লিড রোলকে স্ক্রিন প্রেজেন্স দিতে হয়, যদিও গল্পে সেসব প্রেজেন্স সবসময় ভ্যালু যুক্ত করে না।
একটু আগে অভিনয় প্রসঙ্গে যা বলছিলাম। আমার স্কেলিংয়ে আফরান নিশোর পটেনশিয়ালিটি আধাঘন্টার নাটকে ১৫ মিনিট স্ক্রিন প্রেজেন্স পাওয়ার মতো। একটা ৪ ঘন্টার কনটেন্টে নিজেই আড়াই ঘন্টা স্ক্রিন দখল করে রাখার ক্যারিশমাতে তার ঘাটতি রয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই একঘেয়ে বা রিপিটিটিভ লাগতে শুরু করে। শতাব্দী ওয়াদুদ, আহমেদ রুবেল, অম্লান এমনকি ব্যারিস্টার চরিত্রের ইমতিয়াজ বর্ষণের ক্ষেত্রে এই অনুভূতিটা হয় না। সম্ভবত এখানেই অভিনয় স্কিলের পার্থক্য, কিংবা হতে পারে অন্য কোনো স্পার্কিং উপকরণ যা তার মধ্যে মিসিং
সংলাপের পাশাপাশি কাইজার দেখার ক্ষেত্রে অনুঘটকের কাজ করেছে ইমতিয়াজ বর্ষণ এবং নাজিবা বাশার। ইমতিয়াজ বর্ষণ স্ক্রিনজুড়ে যেভাবে বিচরণ করেছে মনে হয়েছে তার স্কোপ আরো বেশি, সে তুলনায় স্ক্রিপ্ট রাইটার তাকে অনেকটাই খাঁচায় বন্দী করে রেখেছে। একজন ঠাণ্ডা মাথার সাইকোপ্যাথ হিসেবে তাকে পোরট্রে করতে হলে নিশোর থেকে স্ক্রিন টাইম কিছু কমিয়ে তাকে দিতে হত। তাতে স্টোরির বিল্ড আপ মজবুত হত, খাবারও সুস্বাদু হতো ধারণা করি।
বর্তমান সেট আপ এ নাজিবা বাশারের তেমন কোনো জায়গাই রাখা হয়নি। নায়কের ডিভোর্স হয়ে গেছে, সুতরাং তার মাধ্যমে দর্শকের রোমান্টিকতার চাহিদা পূরণ করতে একটা গ্ল্যামারাস আইটেম যুক্ত করে দাও গল্পে, সেই ফর্মুলা মেনেই তাকে ফিট করা। নইলে তার থাকা না থাকাতে গল্পের কোনো শ্রীবৃদ্ধি-শ্রীহানি ঘটেনি। সবটাই কমার্শিয়াল প্রয়োজন। কিন্তু তাকে আমি মনে রেখেছি অশ্রুতপূর্ব ভোকাল টোনের গুণে। কোনো বাঙালি নারীর এমন ভোকাল টোন আমার জন্য সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা। তার অন্যান্য প্রজেক্টগুলোকে ওয়াচলিস্টে নিয়ে আসতে হবে দ্রুতই।
কেবলমাত্র ভোকাল টোনের কারণে কৈশোর-তারুণ্যে কলকাতার রূপা গাঙ্গুলীর সব প্রজেক্ট এ লক্ষ্য রাখতাম। রূপা গাঙ্গুলী ফিল্ম থেকে দূরে বহুদিন। নাজিবা বাশারের মাধ্যমে তার শূন্যতা পূরণ হয়েও যেতে পারে।
পরের সিজনে নাজিবা বাশার হয়তবা বেশি স্কোপ পাবে। কিন্তু তার ক্যারেক্টারের নৈতিক ভিত্তি এতটাই নাজুক তার স্ক্রিন প্রেজেন্স বাড়ালে গল্পের সৌন্দর্যহানি ঘটবে বহুলাংশে!
স্ক্রিপ্ট রাইটার সেনসিবল, স্মার্ট এবং ব্যবসামনস্ক। সে একই সাথে বর্তমান প্রজন্মকে টাচ করতে চেয়েছে, আবার ৯০ দশকের জনপ্রিয় সব কার্যকলাপকে একীভূত করে এখনকার মাঝবয়েসীদেরও নিয়ে গেছে নস্টালজিয়ায়। থ্রিলার পাঠকদের পাঠ্যতালিকার প্রায় কাউকেই বাদ রাখেনি। থ্রিলারের চাহিদা সব যুগেই ছিল তুঙ্গে, তাই নিখিল বাংলা থ্রিলার সমিতি গঠনের যে ইশতেহার সে উপস্থাপন করেছে স্ক্রিনে সেই মিশনে সে নিঃসন্দেহে সফল।
তাই কাইজার যতটা আর্টওয়ার্ক, তার চাইতে বেশি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, যেখানে কোনো স্থানীয় কোম্পানি সিলিকন ভ্যালি থেকে ফান্ড সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বিবিধ স্লাইডে মনোহরী বক্তব্যে প্রলুব্ধ করতে চাইছে বিনিয়োগকারীদের।
থ্রিলার থেকে প্রত্যাশাই বা কী!