আরিফাকে নিয়ে যা-ই লিখি, সেটা হোক ৫ লাইনের পারিবারিক কথন অথবা পূর্ণাঙ্গ গল্প কিংবা বইয়ের উৎসর্গলিপি, লেখা পড়ে তার প্রতিক্রিয়া থাকে প্রায় অভিন্নই-
‘নিতান্তই দায়সারাভাবে লিখেছ, তোমার যেসব লেখা নিম্নমানের হয়, এটা সেগুলোর মধ্যেও নিম্নস্তরের। অথচ অন্য কাউকে নিয়ে লিখলে সেখানে উচ্ছ্বাস, অনুরাগ উপচে পড়ে। বাস্তব মানুষ না হয়ে তোমার কোনো ক্যারেক্টার হয়ে থাকতে পারলেই ভালো হত’!
যেহেতু আরিফা অনুভূতিপ্রবণ মানুষ, প্রতিক্রিয়া সযত্নে গ্রহণ করে সাজিয়ে রাখি শেলফে, আর্গুমেন্ট বাড়াই না।
আমি হাঁটতে হাঁটতে লিখি, ঘুমের ফাঁকে লিখি, ক্রিকেট খেলা, চ্যাটিং– যে কোনো অবস্থাতেই লিখতে পারি অক্লান্ত এবং অকুতভয় মানসিকতায়। কিন্তু যখনই আরিফাকে ভিত্তি ধরে কিছু লিখতে উদগ্রীব হই, আগাম প্রতিক্রিয়া কল্পনা করে মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে, এবং পুল শট খেলার বদলে টপ এজড হয়ে বল ভাসতে থাকে হাওয়ায়, ক্যাচ নিতে প্রস্তুত হয় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ফিল্ডাররা।
বিশেষত সোস্যাল মিডিয়াসূত্রে প্রায় প্রতিদিনই এত বেশি রেসপেক্টফুল এবং রোমান্টিক স্বামী দেখা হয় তাদের সাপেক্ষে আমাকে বিচার করলে মুহূর্তেই রূপান্তরিত হই খাঁজকাটা কুমিরে!
যেমন তার চিরন্তন আপত্তি- ‘আরিফা কিসের; আমি তোমার স্টুডেন্ট নাকি এসিসট্যান্ট। নামের আগে একটা বিশেষণ তো দিবা। সহমানুষ, স্ত্রী, বউ, সহধর্মিণী— শব্দের অভাব নাকি? তুমি না নতুন শব্দ বানাও! আসলে মন থেকে ফিল করো না তো, তাই এমন জীর্ণ দশা। নাহয় আমি ভুচরা রিয়াদের খেলা পছন্দ করি, তাই বলে তুমি এমন করবা’!
আমার কতিপয় শুভাকাংখীরও কৃতিত্ব নিদারুণ এক্ষেত্রে। তারা সামনাসামনি আমাকে জীবন্ত মহামনিষী বানিয়ে দেয়, আড়ালে আরিফাকে আমার বইয়ের বিভিন্ন লাইনের স্ক্রিনশট পাঠিয়ে দেয় মেসেঞ্জারে, তারপর জিজ্ঞেস করে- ‘উনি যে এসব ক্যারেক্টার নিয়ে লেখেন, আপনার খারাপ লাগে না’? প্রশ্নের নিগূঢ়ার্থটা এমন পাপড়ি, সঞ্চিতা দে, লুবনা, অজন্তা হালদার, ফারহানা ব্রতী সহ যত প্রভাবশালী নারী ক্যারেক্টার থাকে বইয়ে প্রত্যেকের
প্রেমে ডুবসাঁতার কাটছি আরিফা কি সে ব্যাপারে অবগত; হয়ে থাকলে তার খারাপ কেন লাগে না; লাগা উচিত তো!
তার আগ পর্যন্ত আরিফা বইয়ের লেখাকে বইয়ের জায়গাতেই রেখে দিত, কিন্তু শুভাকাংখীরা যেহেতু দায়িত্ব নিয়ে এমন প্রশ্ন করেছে, তার মানে কোথাও ঘাপলা থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু ঘাপলাটা কী ধরতে না পেরে তার রাগ গিয়ে পড়ে লেখার ক্যারেক্টারের উপর, আমার কল্পিত পৃথিবীর উপর, এবং পরবর্তীতে প্রেমবশত যখনই তাকে নিয়ে কিছু লিখতে বসি সেইসমস্ত শব্দের উপর। সে ধরেই নেয় ক্যারেক্টার নির্মাণে যাবতীয় প্রেমপুঁজি খরচ করে আমি সর্বশান্ত, তার জন্য আর কিছুই নেই অবশিষ্ট।
সাধারণত এই পয়েন্টে এসে অন্য সম্পর্কগুলোতে চিড় ধরে, তিক্ততা তৈরি হয়, আমাদের ক্ষেত্রে ঘটে উল্টোটা। পরস্পরকে নতুন চোখে দেখি, সে শুরু করে আমার ইন্টারভিউ।
যে কারণে
আমরা তখন সেইসব শুভাকাংখীকে নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করে বিনোদিত হই, তাকে জিজ্ঞেস করি অমুক শুভাকাংখী তোমার সাথে লাইন-টাইন মারার চেষ্টায় আছে কিনা, আচ্ছা দাও তোমার হয়ে আমি কয়েকটা মেসেজের রিপ্লাই দিই; তুমি তো ভাবের কথা কম জানো!
মনে মনে ভাবি এত উদার, প্রগতিশীল আর সেক্যুলার শুভাকাংখী নিয়ে আমি করবটা কী!
কিন্তু এত রঙ্গ-রসিকতার পরেও আরিফার মন থেকে সরে না সেই স্থায়ী ভাবনা- ‘তুমি তো আমারে নিয়ে লিখ স্রেফ রেসপনসিবিলিটির অংশ হিসেবে। অন্য যে কোনো মানুষ তোমার লেখায় কমেন্ট করলে কী সুন্দর রিপ্লাই দাও, আমার কমেন্ট খেয়াল করারই প্রয়োজন বোধ করো না। ভুচরা রিয়াদ অবসর নিলে কি তোমার আচরণ বদলাবে’?
আমার এবং আরিফার মাঝখানে লং অফ এ ফিল্ডিং করতে থাকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কোন কুক্ষণে তার নামের পূর্বে যুক্ত করেছিলাম ভুচরা বিশেষণ, তার প্রভাব পড়লো সংসার জীবনেও!
কিন্তু এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না। আরিফা কোন পেজে লাইক দেয়, কোন সেলিব্রিটিকে অনুসরণ করে কতকিছুই তো জানি, সেসব নিয়ে একটি বাক্যও ব্যয়িত হলো না, রিয়াদের ফ্যান-ফলোয়ারদের নির্বিচারে ফেসবুকে ব্লক করে দিয়েছি বিধায় তার ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে যে মনের দিক থেকে সেও আমার ব্লকলিস্টে। অথচ লিটন দাস যখন খারাপ খেলে এবং বেঁচে যায় আমার উপহারের টাকা, তখন তার আনন্দ দেখলে পৃথিবীর বিষন্নতম মানুষটির মুখেও প্রবাহিত হবে হাসির ফল্গুধারা!
আমি তারে যতই বিজনেস ক্লাসের টিকিট দিই সে ৮ নম্বর লোকাল বাসেই গাদাগাদি করে যাত্রাবাড়িতে যাতায়াত করবে, অর্থাৎ নিজের পজিশন বিস্মৃত হয়ে অন্যদের ভিড়ে জায়গা খোঁজা এবং না পেয়ে কারণ হিসেবে ভুচরাপ্রীতি আবিষ্কার করা!
আজ আরিফার জন্মদিন। গতরাত থেকেই ভাবছি একটা দারুণ আবেগি লেখা লিখব, যেখানে থাকবে ‘আমার নিজের মানুষটার, সাধনসঙ্গীর আজ জন্মদিন। সে ছাড়া আমি অপূর্ণ, সে ছিল বলেই পৃথিবীর সব চিতল মাছ আজও রূপচাদার চেহারায় ভেসে বেড়াচ্ছে সমুদ্রে। আপনারা আমাদের জন্য প্রার্থনা করবেন যেন যুগ যুগ ধরে পাশাপাশি থাকতে পারি, ওয়াসার পানির লাইনের মতো যেন ভেজাল না হয় পানির সরবরাহে, বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের রসমালাই হোক আমাদের প্রতিটি মুহূর্ত। আমি কিন্তু তাকে অনেএএএক ভালোওওওবাসি। পরজন্ম বা সহস্রতম জন্মেও যেন বিচ্যুত না হই’—— কিন্তু লাইনগুলো চিন্তা করতেই আরিফার প্রতিক্রিয়া প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল- ‘শেষ পর্যন্ত এইসব বস্তাপচা জি-বাংলা সিরিয়ালের সস্তা সংলাপ লিখলা, ছিঃ! তোমার কোয়ালিটির এত অধঃপতন হয়েছে৷ জাম্বুর স্বপ্নের বাংলাদেশে তুমি এসব লিখে আমাকে উইশ করবে! বিদায় হও। এখন যদি জিয়া ভাই বা সঞ্চিতা দে কে নিয়ে লিখ, সেটা তো ঠিকই জাম্বুর স্বপ্নের বাংলাদেশের সাথে পরিপূর্ণ মানানসই হবে’
—- যে কারণে লাইনগুলো আর বর্ধিত হলো না, ব্যাকস্পেস চেপে চেপে তাদের পাঠিয়ে দিলাম ব্ল্যাক হোল এ!
লেখককে যাপন করতে হয় মাল্টিপল অস্তিত্বের যাতনা, কোন অস্তিত্বে সে কখন বিচরণ করে সেই নিয়ন্ত্রণ কি তার নিজেরও থাকে আদৌ? পরিবারের মানুষেরাও যদি সারথি হতে চায় সেইসব প্যারালেল পৃথিবীতে, সেই চাওয়া পূরণের সাধ্য কই। কারণ প্রতিটি প্যারালেল পৃথিবীতে লেখক নেপচুন গ্রহের মতোই বিশুদ্ধ একাকী কিংবা নিঃসঙ্গ; সে হাঁটছে কিন্তু এগুচ্ছে না, স্পর্শ করছে মানুষ অথচ অনভব করছে মহিষের উষ্ণতা।
সেই জটিলতার প্যারালেল পৃথিবীতে বসবাসকারী ক্যারেক্টারদের সাথে রক্ত-মাংসের শরীরে আবদ্ধ বাস্তব মানুষ যে বা যারা আপনেরও আপন তারা যদি প্রতিদ্বন্দ্বীতায় অবতীর্ণ হতে চায়, সেটা চাওয়ার সংকট নাকি লেখকের মেন্টাল স্মার্টনেসের ঘাটতি?
বিনা দ্বিধায় দ্বিতীয় অপশনটাতেই দিলাম টিকচিহ্ন!
যেহেতু ৩৫ তম জন্মদিন, আরিফাকে আর তরুণী বলা উচিত হবে না, মধ্যবয়সী বললে অবশ্য চেহারায় মিলবে না। আমাদের বয়সের ব্যবধান মাত্র ১৯৩ দিনের হলেও বাহ্যিকভাবে লাগে ১৯ বছর বা তারও বেশি। আমার বয়স বিপর্যয়ের দায় সে কেন নিবে!
জন্মদিনের লেখাগুলোর কমন প্যাটার্ন হলো গুনকীর্তন, গ্লোরিফিকেশন আর কৃতজ্ঞতা স্বীকার, যদিও জানি না এতে কোন পারপাস পূরণ হয়। আরিফা কেমন তা ব্যাখ্যার জন্য আমাকে এতদিন সহ্য করে যাওয়া, এবং লক্ষণ যা দেখছি তাতে আমৃত্যু সহ্য করার বিরল যোগ্যতাই সব বলে দিচ্ছে।
এটা অবশ্য ক্লিশে স্টেটমেন্ট৷ প্রতিটি মানুষই নিজেকে স্বল্প-মাঝারি-উচ্চমানের হনু কল্পনা করে রতিসুখ পায়, তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে উপস্থাপনে। হনু প্রমাণের সুযোগ আমিই বা ছাড়বো কেন!
কিন্তু হনুগিরি একপাশে রেখে যদি ফ্যাক্ট পর্যালোচনা করি, আমি সামাজিকভাবে পরিত্যাজ্য এবং পরিত্যক্ত একজন মানুষ, তার সাথে জীবন পাড়ি দেয়া এবং প্রজাতি রক্ষায় অবদান রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া কোনো সহজ ব্যাপার নয়, এর পেছনে থাকে বিপুল স্যাক্রিফাইস আর দীর্ঘশ্বাসের গল্প।
সেটাকে এপ্রিসিয়েট করতে গেলেই আরিফা বলবে গতানুগতিক এপ্রোচ, অন্য কারো ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই অন্যরকম কিছু করতা, তোমারে ভরসা নাই কাকা!
আমি তাই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি সেই কথিত ‘অন্য কারো’ দের সনাক্ত করতে; পারি না, ক্ষোভ জমা হয় নিরীহ কদবেল গাছের প্রতি।
কদবেল গাছেরও একটি স্বতন্ত্র ইতিহাস আছে। আরিফার সাথে আমার যখন আলাপ হয়, মানিকগঞ্জে ওরা যে বাসাটায় থাকতো তার সমুখে ছিল একটি আমগাছ। আমি তখন তুমুল হতাশ যুবক, জীবন কীভাবে কাটবে ভাবি না; কেবল লেখালিখি করি, বিভিন্ন মানুষকে চিঠি লিখি আর অনবরত চা খাই। আরিফাদের সেই আমগাছটি আমাকে আকৃষ্ট করেছিল, মনে হচ্ছিল বিচ্ছিন্ন থাকতে থাকতে আমিও পরিণত হয়েছি এক প্রকাণ্ড আমগাছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রথম প্রকাশিত বই প্রযত্নে-হন্তা তে একটি গল্প স্থান পায় ‘ঈশিতা একটি আমগাছ খুঁজেছিল’
কিন্তু পরবর্তীকালে আমার আমগাছ সত্তার মুক্তি ঘটে, আমি রূপান্তরিত হই ‘ষৎকো’ নামের পিঁপড়ায়, কখনোবা দাঁড় কাক এ। ততদিনে আরিফার কদবেলপ্রীতি সম্বন্ধে অবগত হয়েছি। কিন্তু চেনাজানা কোথাও কদবেল গাছ আর পাই না। বহু খোঁজাখুজির পর ফিরে যাই ১৯৯২ সালে, ঘিওরের এক গেরস্থবাড়িতে; সেখানে সুপারি, দেবদারু, কামরাঙ্গা, নারিকেলের সাথে একটি কদবেল গাছও খুঁজে পাই। শারীরিকভাবে যখন যে সালেই বিচরণ করি, কদবেল স্মরণে এলেই টুপ করে ঘিওরের বাসে উঠে পড়ি ১৯৯২ এ ফিরতে!
অতীত-বর্তমানে হাঁটাহাঁটি করে বিপর্যস্ত আমি, না পারি অতীতে থাকতে, না পারি বর্তমানকে বিলং করতে। কদবেল গাছটি না থাকলে এই হ্যাপা তো নিতে হত না। কদবেল অতি অপছন্দের ফল, চেহারা দেখলেই চোখ ফিরিয়ে নিই, কেবলমাত্র আরিফার প্রীতির কারণে ওই বদখত গাছটাকে পরিচর্যা করি, মাঝেমধ্যে গাছ দেখতে নিয়ে যাই নাঈম শেখকে, যার তখন জন্মই হয়নি।
অথচ আরিফা মজে আছে ‘অন্য কারো’ সিনড্রোমে। কদবেল গাছকে এত পেলে-পুষে এই তবে প্রাপ্তি! এর চাইতে সাংকোপাঞ্জা অভিনীত সিনেমা দেখে সময় খরচ করলেও তো কমেডির কনটেন্ট পেতাম!
আরিফাকে বলি চলো কদবেল গাছ দেখে আসি, ১৯৯২ এর ঘিওরে।
সে বলে- ‘লাভ কী, ওখানে আগেই আরো অনেকে এসে বসে আছে৷ জিয়া ভাই, লুলু, আরমান, ফারহানা ব্রতী, পাপড়ি সহ আরো অনেকে। ভিড়ে পিষ্ট হতে চাই না৷ এমন কোথাও চলো যেখানে কেউ কোনোদিন যায়নি, আগামীতে যাবেও না; সেখানে শুধু তুমি আর আমি। আমি রেডি, তুমি রেডি তো’!
কথা তো লজিকাল। সিঙ্গুলারিটির প্রতি মানুষের মোহ বা আসক্তি তো দুর্নিবার। কিন্তু মাল্টিপল অস্তিত্ব, ছোট ছোট অসংখ্য উপপৃথিবীর যে ক্লান্তিকর জীবন সেখানে এমন জায়গা কোথায় পাই যেখানে কেউ যায়নি, যাবেও না নিশ্চিত! সেই বিভ্রম শেষ হয় না বলেই আরিফার কাছে সময় চেয়ে নিই, একদিন হ্যাঁ একদিন তেমন জায়গা খুঁজে পাবোই।
এবং সে কারণেই আরিফা কদবেল গাছ খোঁজায় ইস্তফা দিয়েছে। সে বরং উনিশ-তেইশের জন্য ক্রিম বান আর স্যান্ডউইচ খোঁজাটাকেই অধিক মিনিংফুল ভেবে আমাকে মুক্ত করে দিয়েছে কবুতরের মতো করে; যাও এবার আকাশে উড়ে দেখ ঘরের কত ওজন!
উড়তে উড়তে আজ তাই ২৪ ফেব্রুয়ারিতে ঘরের ওজন মাপতে বসলাম, কিন্তু বাটখারা আর ডিজিটাল মেশিনও বলতে পারছে না ওজনটা কত। পুনরায় উড়াল দেবার পূর্বে আরিফার জন্য ১ লাইনের চিরকুট
শুভ জন্মদিন, ভালোবাসি এবং ভালোবাসা নাও; যদি উড়াল শেষে আর না ফিরি কিংবা পথ ভুলে চলে যাই অন্য গৃহে, জেনো সেই জায়গাটা খুঁজতেই এই অন্তহীন উড়াউড়ি। তোমার কল্যাণ হোক, ঘরের সাথে সাথে তোমারও বৃদ্ধি পাক ওজন!