হিমালয় ভাইয়ার সাথে পরিচয় নামহীন বই সূত্রে। ঠিক পরিচয় বলতে যা বোঝায় সেরকম আনুষ্ঠানিক কোন যোগাযোগ হয় নি। তবে নামহীন বই সম্পূর্ণটা শেষ করার সূত্রে ভাইয়ার সম্পর্কে অনেক কিছুই জানি। সেই জানা শোনা থেকেই ভাইয়ার একটা ছোট্ট ইন্টারভিউ নেওয়ার প্রচেষ্টা। জীবনে ৪১০০+ ইন্টারভিউ নেওয়া একজন মানুষের ইন্টারভিউ দেওয়ার অনুভূতি শোনা হয় নি। তবে আমার ইন্টারভিউ শেষ হয় নি। অনেক কিছু জানার আছে।
প্রশ্ন: সুখের সংজ্ঞা কী?
হিমালয় ভাইঃ সংজ্ঞা খুঁজে কেউ সুখী হয়নি কোনোদিন। সংজ্ঞা যে কোনো কিছুকে কাঠামোবদ্ধ করে দেয়। কাঠামো মানেই একঘেয়েমি, সুখের নিবাস সেখানে নেই।
প্রশ্ন ঃ তাহলে সুখ কী ?
হিমালয় ভাইঃ সুখ একধনের ইউটোপিয়া৷
প্রশ্নঃ যেমন?কেমন ফিলিংস?
হিমালয় ভাইঃ যেমন- আমার প্রত্যাশা কম, চাহিদা সীমিত, লোভ দ্বারা তাড়িত নই- এরকম অজস্র অবদমনের সামষ্টিক বহিঃপ্রকাশ।
প্রশ্নঃ সংজ্ঞা যদি কাঠামোবদ্ধ কিছু হয় তাহলে কোন কিছুকে বর্ণনা করার জন্য কোন শব্দ ব্যবহার করবেন? যা সংজ্ঞার সীমাবদ্ধতাকে কাটাতে পারে?
হিমালয় ভাইঃ আমি সংজ্ঞায়নের চাইতে ইন্টারপ্রেটেশনে বিশ্বাসী, ইমপ্রোভাইজেশনে আস্থাশীল। এতে করে প্রতিটি অনুভূতি, বোধ, ধারণা সতত ভ্রমণশীল থাকে। প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ইন্টারপ্রেটেশনে পরিবর্তন আসে।
প্রশ্নঃ কাঠামো মানেই যদি এঘেয়েমি হয়, তাহলে সব কিছুকে কাঠামোবদ্ধ করার প্রক্রিয়াকে আপনি কিভাবে দেখেন? কাঠামোবদ্ধতা না থাকলে তো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। বিশৃঙ্খলা তো সুখ কিংবা সৌন্দর্য্য কোনটাই হতে পারে না? নাকি বিশৃঙ্খলার অন্য কোন ইন্টারপ্রিটেশন আপনার কাছে আছে? কিংবা আপনার প্রস্তাবিত কাঠামো আর আমার ইন্টারপ্রিট করা কাঠামোতে কোথাও ফাঁক রয়ে গেছে?
হিমালয় ভাইঃ ‘সবকিছু’ ধারণাটাই ত্রুটিপূর্ণ। বলা যেতে পারে অধিকাংশ বা সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাহলে ব্যালেন্স থাকে, ব্যতিক্রমীতার জন্যও স্পেস থাকে। সুখ সেই ব্র্যাকেটের বাইরে ব্যতিক্রম বলতে পারো।
প্রশ্নঃ আপনার কাছে সুখের মানে কি জাগতিক মোহ দমন?
হিমালয় ভাইঃ দমনের মধ্যে বঞ্চনা আছে। আমি বলতে পারি মোহমুক্তি। এটা পুরোপুরি আয়ত্ত করা সম্ভব নয়। তুলনা স্কেলে কে কতখানি মোহ জয় করতে পেরে মুক্ত হতে পারলো সেটাকে সুখের নিক্তি বলা যেতে পারে। পৃথিবীর জন্য সুখী মানুষের ডিমান্ড নেই, পৃথিবী চায় কেয়ারিং এবং সেনসিবল মানুষ।
প্রশ্নঃ আমরা কম বেশি সবাই মানুষ পর্যবেক্ষণ করি। সার্ভাইবাল অফ দ্যা ফিটেস্টের সাথে এডজাস্ট করার জন্য আমাদের মানুষকে বুঝতে হয়। পর্যবেক্ষণ করতে হয়। আপনার পর্যবেক্ষণ কেন সাধারণ পর্যবেক্ষণ না? আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা ঘটা করে ইন্টারভিউ না নিলেও নানা ভাবে আমরা তথ্য সংরক্ষণ করি। কৌতুহল থেকে প্রশ্ন করি। আপনার বিশেষত্বটা কোথায়?
হিমালয় ভাইঃ নিজের পর্যবেক্ষণ নিয়ে আমার তেমন উচ্চাশা নেই। আমার পর্যবেক্ষণ যে সাধারণ পর্যবেক্ষণ না এটা তুমি প্রশ্ন না করলে মাথায়ই আসতো না। আমি বরাবরই লিসেনার হিসেবে নিজের স্বকীয়তা এবং একাগ্রতার কথা বলি। কারণ ৬ বছর বয়স থেকে আমি ডেলিবারেটলি মানুষের কথা শুনি, কোনো বাক্য পছন্দ হলে খাতায় লিখে রাখতাম, এরপর ১০-১১ বছর হলে তো ইন্টারভিউই নেয়া শুরু করি। listen আর hear এর মধ্যে পার্থক্য বিস্তর। আমি লিসেনার। এমনকি এর বাইরে বিশেষ কোনো প্রতিভাও নেই। জীবনের সমস্ত হাসি-আনন্দের সময়গুলো আমি এই একটামাত্র জায়গাতেই বিনিয়োগ করেছি। এবার তুমিই চিন্তা করে দেখো, তুমি এরকম কোনো মানুষ কখনো দেখেছো কিনা যে জীবনের সবকিছু ভুলে কেবলমাত্র শুনতে চায়। তাহলেই তোমার প্রশ্নের উত্তর পাবে।
প্রশ্নঃ হিউম্যান ল্যাব ৭৭৭ নামে আপনার একটা প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়েছে সম্প্রতি। আপনারা বিভিন্ন গ্রুমিং প্রোগ্রাম, স্কুলিং, ডিসেন্ট মেন্টরশিপ, স্টার্ট আপ সম্পর্কে মেন্টর শিপ…….
আরো কিছু প্রোগ্রামের সার্ভিস চালু করেছেন। সাধারণ ভাবে আমাদের দেশে চলা বিভিন্ন সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলিং, কিংবা ব্যাবসা সম্পর্কে আইনজীবীদের দেওয়া বিভিন্ন পরামর্শ থেকে আপনাদের প্রাতিষ্ঠানের সার্ভিস কতটা আলাদা। কিংবা স্পেশালিটি কী?
হিমালয় ভাইঃ প্রথম কথা, আলাদা হতেই হবে এই ধারণার সাথে আমি একমত না। নিজের কাজটাতে আন্তরিকতা আছে কিনা এটাই প্রধান চ্যালেঞ্জ। আলাদা হওয়ার জন্য আলাদা, এটা খুব ভালো চিন্তা না। এটা গেলো, অন দ্য ট্র্যাক আলোচনা। এইবার হিমালয়ীয় স্টাইলে জবাব দিই। ফেসবুক, সামহোয়ার ইন ব্লগ মিলিয়ে অনলাইনে আমার ৩৪৭+ কনটেন্ট দৃশ্যমান৷ আমি মনে করি সংখ্যাটা যথেষ্ট বড়ো। এতগুলো কনটেন্ট দেখার পরও যদি কারো প্রশ্ন জাগে আমি কোথায় আলাদা বা স্বতন্ত্র, তাহলে হয় আমার কনটেন্ট তৈরি বাদ দিয়ে খাটাশ পালন পেশায় নিয়োজিত হওয়া উচিত, অথবা যার কাছে প্রমাণ দিতে হবে তার জি বাংলায় সিরিয়াল দেখতে দেখতে কুমড়ার মোরব্বা খাওয়া উচিত। we are perfectly mismatched!
প্রশ্ন ঃএমন কোন সার্ভিস যা নতুন? ব্যপারটা তুলনা থেকে নয়। ইনফরমেশন হিসেবে নিলে কি বলবেন?
হিমালয় ভাইঃ পৃথিবীতে নতুন বলতে আদৌ কি কিছু আছে? আমি বরং ইমপ্রোভাইজের পক্ষে। হিউম্যানল্যাব৭৭৭ মানুষকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান। লিসেনার হিসেবে আমি বিগত ২২ বছর ধরে যা শিখেছি সেগুলো দিয়ে মানুষের পটেনশিয়ালিটি ম্যাক্সিমাইজ করে সেটাকে বিজনেস গ্রোথের সাথে ইন্টিগ্রেট করতে চাই। জায়ান্ট কোম্পানীর প্রতি আমার আগ্রহ নেই, বা বিপরীতভাবে দেখলে জায়ান্ট কোম্পানীর দারোয়ান বা সিকিউরিটি গার্ডেরও বিশেষ দায় পড়েনি আমাকে তাদের প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি নিতে দেবার। আমার মূল আগ্রহ স্মল এবং মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ নিয়ে কাজ করার। তবে আমার ব্যক্তিগত পছন্দের জায়গা যদি বলো, আমি বাকি সার্ভিসগুলোর মধ্যে ৩টাকে কিছুটা বেশি মূল্যায়ন করি। প্রথমেই আসবে ডিসটেন্ট মেন্টরশিপের কথা। অদূরদর্শী মানুষের দেশে এই সার্ভিসটার বিকল্প দেখি না। দ্বিতীয়তে থাকবে, রিজেকশন রিফাইনমেন্ট। প্রচুর সংখ্যক তরুণ-তরুণী দিনের পর দিন চাকরির ইন্টারভিউ দিয়েই যাচ্ছে, কিন্তু কেন তাদের চাকরি হয় না সেটাই জানে না, কীভাবে চাকরির সম্ভাবনা বাড়তো সে সংক্রান্ত কোনো পর্যবেক্ষণও নেই। ঢালাওভাবে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে। কিংবা অনেকে ইন্টারভিউ ফেস করতে গিয়েও নার্ভাস হয়ে পড়ে। আমি জীবনে ১৩৩২ জন মানুষের চাকরির ইন্টারভিউ নিয়েছি। ফলে রিজেকশন বিষয়ে আমি হয়তোবা হেল্প করতে পারবো। ৩য় তে রাখবো, স্টার্ট আপ স্কুলিং। মাশরুমের মতো স্টার্ট আপ চালু হচ্ছে, বন্ধও হয়ে যাচ্ছে কিছুদিন পর। এদের প্ল্যানিং এবং প্রসেস সংক্রান্ত বুদ্ধিবৃত্তিক সহায়তা দিলে দেশের ইকোসিস্টেমে বড়ো পরিবর্তন আসবে।
প্রশ্ন ঃ বাংলাদেশের বিসজনেস পলিসি সম্পর্কে আপনার ধারণা কী?
হিমালয় ভাইঃ জায়ান্ট কোম্পানীগুলো কীভাবে বিজনেস করে সে সংক্রান্ত কোনো কংক্রিট ধারণা নেই। তবে স্মল এবং মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজগুলোর বেশিরভাগই চলে দোকানদারি মডেলে, মানে অতিমাত্রায় ঔনারকেন্দ্রিক, মাইক্রো ম্যানেজ করেই ঔনারদের এনার্জি-ইফিশিয়েন্সি খরচ হয়ে যায়। তাতে তারা বেজায় খুশি। মিড লেভেল ম্যানেজমেন্ট বলতে কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই। আর্জেন্ট আর ইমিডিয়েট কাজের প্রাদুর্ভাবে সিগনিফিক্যান্ট কোনো কিছু করাই হয় না। যে কারণে বিজনেস গ্রোথ কার্ভও লিনিয়ার, খুব এক্সপোনেনশিয়াল কোনো গ্রোথ লক্ষ্য করা যায় না। ঔনার বা মালিক মারা গেলে বা কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেললে বিজনেসেরও মৃত্যু ঘটে।
প্রশ্নঃ কখনো সুযোগ পেলে কোন সিস্টেমটা পরিবর্তন করতে চান?
হিমালয় ভাইঃ তোমার প্রশ্নটা ভালো বুঝিনি, আরেকটু স্পেসিফিক বলো।
প্রশ্ন ঃ আমাদের আশে পাশে অনেক সিস্টেম আছে যে গুলা আমাদের কাছে বিরক্তিকর কিংবা আপত্তিকর মনে হয়। কখনো কি কোন সিস্টেম পরিবর্তন করার তাড়না অনুভব করেন?যেমন আপনার বক্তব্য থেকে মনে হচ্ছে আপনি বিজনেস পলিসিটা চেঞ্জ করতে চাইছেন, এমন কিছু সামাজিক, রাষ্ট্রীয় কিংবা বহু দিন ধরে চলে আসা ভুলে ভরা সিস্টেমের পরিবর্তন।
হিমালয় ভাইঃ সিস্টেম তো বাই ডিফল্ট কোনো প্রোগ্রাম না। সিস্টেম মানুষেরই তৈরি। কোনটা টিকে যায়, কোনটা বিলুপ্ত হয় এটা মানুষের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপরই নির্ভর করে। হাতি-ঘোড়া মারার স্লোগান তুলে শেষতক মশার কামড়ে নিহত হয় মানুষ। আমি তাই মাত্র ২টা পরিবর্তন ইস্যুতে কাজ করতাম। যদি সম্ভব হতো, প্রশ্ন করাটা বাধ্যতামূলক করে দিতাম স্কুল এবং কলেজ পর্যায়ে। মানুষে মানুষে পার্থক্য হয় প্রশ্ন আর প্রশ্নহীনতায়। প্রশ্নকে প্রমোট করলে বহু সিস্টেম এমনিতেই বিবর্তিত হতো। আর অতি অবশ্যই বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যয়কে কঠোর নিয়মের অধীনে আনতাম।।আমার কাছে ডাটা নেই, তবে বাংলাদেশের যা অর্থনৈতিক কাঠামো, তাতে এখানকার বেসরকারি মেডিকেল ট্রিটমেন্ট এক্সপেন্স অত্যন্ত বেশি। কখন কোন বিপদ- আপদ হয় বলা তো যায় না- এই লাইনটা একবারও শুনেনি এমন কোনো বাঙালি আছে? কিন্তু সেই বিপদ আপদ মূলত পুলিশি ঝামেলা আর অসুস্থ্য হয়ে পড়া ছাড়া কিছু নয়। সেই ট্রিটমেন্টই যদি এতো ব্যয়বহুল হয়, মানুষের কোনো অপশন থাকে না। সে আত্মকেন্দ্রিক হতে বাধ্য হয়।
প্রশ্নঃ আত্নকেন্দ্রীকতাকে ঠিক কি অর্থে নেগেটিভ বলবেন? আমরা কম বেশি সবাই আত্মকেন্দ্রিক। তাহলে কোন সীমাটা পার হলে আত্নকেন্দ্রীকতা একটা নেগেটিভ ইম্প্রেশন দেয়?
হিমালয় ভাইঃ আত্মকেন্দ্রিকতা আর আত্মনিমগ্নতা এক না। আত্মকেন্দ্রিকতা মানে নিজের স্বার্থসিদ্ধিকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া এবং তাতে অন্যের ক্ষতি হলো কি হলো না তা বিবেচনাতেই না আনা। এটা অতিমাত্রায় ব্যক্তিগত এবং বৈষয়িক ভাবনা দ্বারা তাড়িত। আত্মনিমগ্নতা মানে বিচ্ছিন্নতা যেখানে জাগতিক দায়-দায়িত্বকে উপেক্ষা করে সুনির্দিষ্ট কোনো কিছুতে সময় দেয়া। আত্মনিমগ্নতা তাই ব্যক্তিগত নয়, সামষ্টিক বোধ দ্বারা চালিত। আত্মকেন্দ্রিকতা নেগেটিভ, কারণ এটা দেয়ালের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ -উচ্চতা বাড়াতে বাড়াতে এক সময় গরাদ বানিয়ে ফেলে।
প্রশ্ন ঃজীবন শব্দটা সম্পর্কে যদি আপনাকে কমেন্ট করতে বলি, কি বলবেন?
হিমালয় ভাইঃ কমেন্ট হবে না, কয়েকটা শব্দ বলতে পারি, যেগুলো এলোমেলো কিন্তু অর্থবহ। জ্যামিতি, টাইম ট্রাভেল, ইলিউশন, কানেক্টিভিটি, পরম্পরা।
প্রশ্ন ঃএগুলো কিভাবে জীবনের সাথে কানেক্টেড?
হিমালয় ভাইঃ জানি না। কিংবা জানাতে চাই না। কিংবা জানার চেষ্টা চলছে। কিংবা জানার সীমাবদ্ধতা আবিষ্কার করতে চাচ্ছি।
প্রশ্নঃ নিজের উন্নতি সম্পর্কে আপনার ইচ্ছা কি? বৈষয়িক ও হতে পারে আত্নিক ও হতে পারে।
হিমালয় ভাইঃ আমি আসলে নিজেকে শরীরবন্দী মানুষের বাইরে দেখতে চাই, কিন্তু শরীরের বৈশিষ্ট্য ( ক্ষুধা-তৃষ্ণা-কাম-ক্রোধ- প্রশংসা-বার্ধক্য) একটাও জয় করতে পারি নাই, বিশেষত ক্ষুধা-তৃষ্ণা- বার্ধক্য কিছুটা জয় করতে পারলেও কাম-ক্রোধ-প্রশংসার দাসানুদাস হয়ে আছি। এটা বিস্তর হতাশার এবং বিরক্তিকর।
প্রশ্নঃ কার ব্যক্তিত্ব আপনার মনে শূন্যতা তৈরি করে যে, আমি কেন তার মতো হতে পারলাম না।এই জাতীয় ফিলিংস বা হওয়ার ইচ্ছা হতে পারছেন না?
হিমালয় ভাইঃ আমি চিরকালই আমিই হতে চাইছি। তুমি আমার নামহীন বই পুরোটা পড়েও এই প্রশ্ন কেন করলে আমার বোধগম্য হলো না।
প্রশ্নঃ আমার কাছে মনে হয় সবারই কারো না কারো কিছু না কিছু গুণ ভালো লাগে। আয়াত্ব করতে চাই, কিন্তু হয়ে উঠে না। আমরা সবাই সবার মতো। সব ভালো কিছু নিয়ে সবচেয়ে ভালো হতে চাই। আমার প্রশ্ন টা আপনার কোন আফসোস কিংবা অপূর্ণতা?সেটা আপনার সীমাবদ্ধতা হতে হবে এমন না।সিচুয়েশনের কারণেও হতে পারে।আপনি করতে চাইতেন কিন্তু করা হয়ে উঠেনি।
হিমালয় ভাইঃ এরকম যদি বলি আমি যে ৪১০০+ মানুষের ইন্টারভিউ নিয়েছি, প্রতিবার আমি প্রত্যেকের মতো হইছি। নইলে কোনোরকম স্ক্রিপ্ট ছাড়া ৩-৪ ঘন্টা অপরিচিত মানুষের ইন্টারভিউ করা যায় না। এর বাইরে, আমার যে ২৬টা অবসেসন, তাদের কথা ধরতে পারো। তারাই পরিচালিত করে আমায়।
প্রশ্নঃ প্রশংসা ক্ষেত্র বিশেষে ইনসপিরেশন হিসেবে কাজ করে। আমরা এটাকে পজেটিভলি নেই। এই প্রশংসা বা এপ্রিসিয়েশন কেন পুরোটাই ফেলনা?
কিছুই কি নেবার নাই?
হিমালয় ভাইঃ হয়তো নেবার আছে, আমি নিতে পারি না, প্রশংসা আমাকে স্লথ করে দেয়।
ভাইয়ার সাথে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ইন্টারভিউর এখানেই সমাপ্তি।